আজ বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের ৫৪তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭১ সালের এই দিনে তিনি করাচির মাসরুর বিমানঘাঁটি থেকে প্রশিক্ষণার্থী রশিদ মিনহাজের কাছ থেকে টি-৩৩ প্রশিক্ষণ বিমান নিয়ে মুক্তাঞ্চলে আসার চেষ্টা করেন। তবে ভারতীয় সীমান্ত থেকে মাত্র ৩৫ মাইল দূরে থাট্টা এলাকায় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় অর্ধ মাইল দূরে তার অক্ষত দেহ উদ্ধার করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মতিউর রহমান ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট পদে কর্মরত ছিলেন।
দেশের এ মহান সন্তানের জন্ম ১৯৪১ সালের ২৯ নভেম্বর ঢাকার আগাসাদেক রোডের পৈতৃক বাড়িতে। শৈশবেই তিনি পড়াশোনা শুরু করেন ঢাকার কলেজিয়েট স্কুলে। পরে ভর্তি হন সারগোদার বিমানবাহিনী পাবলিক স্কুলে। ১৯৬১ সালে তিনি যোগ দেন পাকিস্তান বিমানবাহিনীতে।
১৯৬৩ সালে রিসালপুর পিএএফ কলেজ থেকে পাইলট অফিসার হিসেবে কমিশন লাভ করেন। কমিশনপ্রাপ্তির পর তিনি করাচির মৌরিপুর (বর্তমান মাসরুর) এয়ার বেজের দুই নম্বর স্কোয়াড্রনে জেনারেল ডিউটি পাইলট হিসেবে নিযুক্ত হন। এখানে তিনি টি-৩৩ জেট বিমানের ওপর কনভার্সন কোর্স সম্পন্ন করেন। ইরানের রানী ফারাহ দিবার সম্মানে পেশোয়ারে যে বিমান মহড়া অনুষ্ঠিত হয়, তাতে তিনিই একমাত্র বাঙালি পাইলট ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধে মতিউরের অসম সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে সর্বোচ্চ জাতীয় খেতাব ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করে। পাকিস্তান সরকার মতিউর রহমানের মরদেহ করাচির মাসরুর বেসের চতুর্থ শ্রেণির কবরস্থানে সমাহিত করেছিল। ২০০৬ সালের ২৪ জুন মতিউর রহমানের দেহাবশেষ পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়। ২৫ জুন তার দেহাবশেষ পূর্ণ মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে ফের দাফন করা হয়।