নতুন বাজেট প্রস্তাবে প্রবৃদ্ধির পরিবর্তে সামগ্রিক উন্নয়ন ভৌত অবকাঠামোর পরিবর্তে মানুষকে প্রাধান্য দেওয়ার কথা বলা হলেও চলমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার কোন পথরেখা নেই বলে মন্তব্য করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
আজ (৩ জুন) মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর লেকশোর হোটেলে আয়োজিত বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দেওয়া বাজেট প্রস্তাবে কর্মসংস্থান ও বৈষম্য হ্রাসের সুনির্দিষ্ট কর্মসংস্থান ও পদক্ষেপ নেই বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে সিপিডি।
২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে জমি ও ফ্ল্যাট কেনায় কালোটাকা বৈধ করার সুযোগ অব্যাহত রাখার উদ্যোগকে ‘নৈতিকতা বিরোধী’ ও ‘বৈষম্যমূলক’ হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, এই ধরনের ব্যবস্থা সৎ করদাতাদের নিরুৎসাহিত করবে এবং ‘বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের’ অঙ্গীকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
তিনি আরও বলেন, বাজেটে কিছু ইতিবাচক দিক থাকলেও চলমান অর্থনৈতিক সংকট যথাযথভাবে বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। রাজস্বনীতি, কর কাঠামো ও উন্নয়ন ব্যয়ের বিভিন্ন দিক বাজেটের ঘোষিত ‘সমতামুখী ও টেকসই উন্নয়ন কাঠামো’-র সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সংস্থাটির ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাজেটের মাধ্যমে রাজস্বনীতির ব্যবহার করে আয়বৈষম্য কমানোর উদ্যোগ থাকলে সেটি হতো সত্যিকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক বাজেট। অথচ এবারের বাজেটে এমন কোনো নীতিগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেখা যায় না, যা ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ করে।
সংবাদ সম্মেলনে সিপিডি দাবি করে, কালোটাকা বৈধ করার বিতর্কিত প্রস্তাবটি বাজেট থেকে প্রত্যাহার করা উচিত। এই প্রস্তাব বৈষম্য সৃষ্টি করে এবং রাজস্বনীতিকে দুর্বল করে তোলে। সংগঠনটি মনে করে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চেতনাকে সম্মান জানাতে হলে এমন নীতি বাতিল করাই হবে সময়োচিত সিদ্ধান্ত।
তবে বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা নির্ধারণের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে সিপিডি। পাশাপাশি নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ তহবিল গঠনের উদ্যোগেরও প্রশংসা করে সংস্থাটি।