এ যেনো দেশের ফুটবলে নতুন যুগের সূচনা। একের পর এক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রবাসী ফুটবলারদের দলে ভিড়িয়ে চমক দিয়েই যাচ্ছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। হামজা চৌধুরী, ফাহমেদুল ইসলাম, সামিত সোমের পর এবার লাল-সবুজের জার্সিতে খেলতে আসছেন ইংল্যান্ড প্রবাসী ফুটবলার কিউবা মিচেল।
ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় সারির ক্লাব সান্ডারল্যান্ড অনূর্ধ্ব-২১ দলে খেলা কিউবা মিচেল সম্প্রতি বাংলাদেশি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছিলেন। গত মঙ্গলবার (২৭ মে) বার্মিংহামে বাংলাদেশ দূতাবাসে বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়াও শেষ করেছিলেন তিনি। এবার বাংলাদেশের পাসপোর্ট হাতে পেয়েছেন এই তরুণ মিডফিল্ডার।
ইংল্যান্ড প্রবাসী কিউবা মিচেলের বাবা জ্যামাইকান হলেও মা বাংলাদেশি। সেই সূত্রে তার বাংলাদেশের হয়ে খেলার সুযোগ ছিল। ফুটবল ফেডারেশনেরও তার দিকে নজর ছিল অনেক দিন ধরেই। শেষমেষ তিনিও গায়ে জড়াতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের জার্সি। লাল-সবুজের জার্সিতে খেলতে আর বাঁধা নেই এই ফুটবলারের।
কিউবা মিচেল একজন স্বাভাবিক সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার। খেলার গতি নিয়ন্ত্রণে তিনি বিশেষ দক্ষ। ড্রিবলিং, শর্ট পাসিং, কুইক ট্রাঞ্জিশন সবদিক দিয়েই তিনি পরিপূর্ণ। পাশাপাশি তার টার্ন নেয়ার ক্ষমতা ও ক্লোজ কন্ট্রোলে বল ধরে প্রতিপক্ষকে বোকা বানানোর দক্ষতাও প্রশংসনীয়। ডায়াগনাল পাসে পজিশন সুইচ করতেও দারুণ পটু। সেই সঙ্গে ট্যাকলিংয়েও যথেষ্ট দক্ষতা দেখাতে পারেন।
এই সব গুণাবলি তাকে একজন পরিপূর্ণ মিডফিল্ডার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। প্রয়োজনে অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে তাকে। তাই জাতীয় দলে কিউবা মিচেলের যোগদান নিঃসন্দেহে শক্তি বাড়াবে মিডফিল্ডে। এখন অপেক্ষা শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ও মাঠে তার ঝলক দেখার।
এর আগে কিউবা মিচেলের এজেন্ট বেন মারকল জানিয়েছিলেন, জুন উইন্ডোতে বাংলাদেশের হয়ে খেলার ব্যাপারে আগ্রহী কিউবা। তবে তাকে নিয়ে তাড়াহুড়ো করতে চায় না বাফুফে। ফলে জুনের উইন্ডোতে ৪ তারিখ ভুটানের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ ও ১০ জুন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে তার মাঠে নামার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
এদিকে প্রবাসীদের বাংলাদেশের হয়ে খেলার পথটা দেখা জামাল ভূঁইয়া। তার দেখানো পথেই হেঁটেছেন তারিক কাজী তারিক। এরপর নজরটা ছিল ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা ফুটবলার হামজা চৌধুরীর ওপর। অবশেষে গত মার্চে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের জার্সিতে তার অভিষেকও হয়ে যায়। সবকিছু ঠিক থাকলে সিঙ্গাপুর ম্যাচে ফাহমেদুল ইসলাম, সামিত সোমেরও অভিষেক হয়ে যাবে।
হামজা চৌধুরী দলে যোগ দেওয়ার পরই যেনো দেশের ফুটবলে নতুন করে জোয়ার শুরু হয়েছে। এদেশের ফুটবল সমর্থকরা নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। আগে যেখানে দর্শক পাওয়াই ছিল কষ্টসাধ্য, সেখানে আসন্ন সিঙ্গাপুর ম্যাচের টিকিট এক দিনের মধ্যেই শেষ করে ফেলেছে দর্শকরা। তাতে বোঝাই যাচ্ছে, দেশে নতুন করে ফুটবলের জোয়ার উঠছে।