শিরোনাম
বিএনপি নেতার নামে রাজনৈতিক মামলা, তারেক রহমানের দৃষ্টি চেয়ে স্ত্রীর সাংবাদিক সম্মেলন  আবারও ইয়েমেনি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, ইসরায়েলি বিমানবন্দর বন্ধ আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি: সারজিস আলম কু‌ড়িগ্রা‌মে রাজনৈতিক অস্থিরতা, পুলিশি টহল জোরদার বাঁধ দিয়ে পাকিস্তানের পানি আটকে উল্টো বিপদে ভারত, চীনের হুঁশিয়ারি বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত হলেও যোগ না দিয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার পথ বেছে নিয়েছেন ঢাবির ছাত্র হাবিব সাদুল্লাপুরে ধর্ষণ মামলা করে নিরাপত্তাহীন বাদীর পরিবার আ’লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে স্কুলের গাছ চুরির সময় ছাত্রদল নেতা আটক পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অপারেশন সিঁদুরে ২৫০ ভারতীয় সেনা নিহত, গোপনে জানাচ্ছে সম্মান হাসিনা রেহানা জয়সহ ১০০ জনকে নিয়ে গেজেট প্রকাশ
সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৩:০৩ পূর্বাহ্ন

বাঁধ দিয়ে পাকিস্তানের পানি আটকে উল্টো বিপদে ভারত, চীনের হুঁশিয়ারি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক / ৮ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : রবিবার, ৬ জুলাই, ২০২৫

পাকিস্তানকে নদীর পানি থেকে বঞ্চিত করতে গিয়ে উল্টো নিজেদের ঘাড়েই যেন বিপদ ডেকে এনেছে ভারত। সীমান্তবর্তী হিমাচল প্রদেশে ভয়াবহ বন্যায় এখন পর্যন্ত ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, নিখোঁজ অন্তত ৩৭ জন। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মান্ডি জেলাতেই মারা গেছেন ১৪ জন। সরকারি হিসেবে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪০০ কোটি রুপি, বসতবাড়ি ধ্বংস হয়েছে ১৫০টিরও বেশি। রাজ্যজুড়ে ৭ জুলাই পর্যন্ত রেড অ্যালার্ট জারি রেখেছে কর্তৃপক্ষ।

ভারত সরকার বলছে, পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিই এই বিপর্যয়ের মূল কারণ। তবে ভিন্নমত পোষণ করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, পাকিস্তানের ওপর পানির চাপ তৈরি করতে সিন্ধু চুক্তি লঙ্ঘন করে চেনাব নদীর প্রবাহ আটকে দেয় ভারত। কিন্তু সেই কৌশল এখন উল্টো বুমেরাং হয়ে ফিরে এসেছে।

বাঁধের খেলা, বাঁধভাঙা বিপদ

চেনাব ও সুতলেজ (শতদ্রু)—উভয়ই সিন্ধু চুক্তির অন্তর্ভুক্ত নদী, যেগুলো ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশে প্রবাহিত হয়। ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাগলিহার বাঁধের মাধ্যমে চেনাব নদীর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে পাকিস্তানে পানি প্রবাহ বন্ধ করে দেয় ভারত। এই জল-রাজনীতিরই পরিণতি এখন হিমাচলে ভয়াবহ বন্যা।

ভারতীয় আবহাওয়াবিদরা যদিও বলছেন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেই এই দুর্যোগ, তবে পানি বিশ্লেষকরা দাবি করছেন—বাধ্যতামূলক তথ্যপ্রদানে অনীহা এবং হঠাৎ বাঁধ খুলে দেওয়া বা বন্ধ করার মাধ্যমে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটানো হয়েছে।

বন্যা পরিস্থিতির মাঝেই আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন অভিনেত্রী থেকে সাংসদ হওয়া কঙ্গনা রানাউত। তিনি হিমাচলের মান্ডি আসনের সাংসদ হলেও বন্যার শুরু থেকে তার কোনো খোঁজ নেই বলে অভিযোগ। বিজেপিরই প্রবীণ নেতা ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা মানুষের পাশে থাকি, কিন্তু কেউ কেউ থাকেন না, তা নিয়েই মন্তব্য করে লাভ নেই।’

বিরোধী কংগ্রেস এক্সে (আগে টুইটার) ভিডিও ক্লিপ শেয়ার করে লিখেছে, ‘মান্ডির মানুষের প্রতি কঙ্গনার কোনো দায় নেই। এ কথা বলছেন তার দলেরই নেতা।’

পরবর্তীতে কঙ্গনা এক পোস্টে লেখেন, তিনি এলাকা সফর করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু জয়রাম ঠাকুর তাকে রেড অ্যালার্ট থাকার কারণে অপেক্ষা করতে বলেছেন। তবে সমালোচকরা বলছেন, ‘নির্বাচনের সময়েও দুর্যোগ ছিল, তখন ঠিকই মাঠে ছিলেন। এবার কেন নয়?’

চীনের সতর্কবার্তা

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল ভারত সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত করে। যদিও এখন পর্যন্ত পানি পুরোপুরি আটকানোর মতো কোনও পদক্ষেপ নেয়নি, তবে বাঁধের মাধ্যমে চেনাব ও অন্যান্য নদীর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে রাখতে শুরু করেছে। একে অনেকেই বলছেন ‘সাইকোলজিক্যাল ওয়ারফেয়ার’ বা মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ।

তবে এই খেলার শেষ কোথায়, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। কারণ ভারতের প্রধান দুই নদীর উৎস চীনেই। আর চীন এরই মধ্যে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে—‘পানির রাজনীতি করলে, বিপদটা ভারতেরই বেশি হবে।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, নদীর স্বাভাবিক প্রবাহকে হাতিয়ার বানিয়ে কূটনৈতিক চাপ তৈরি করা যেমন বিপজ্জনক, তেমনি এর ফল উল্টো ভারতকেই ভুগতে হতে পারে—হিমাচলের বন্যাই তার প্রমাণ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ