রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার নূরপূর গ্রামের সাজু মিয়া (৩৮) আজ জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করছেন। দীর্ঘদিনের অসুস্থতায় শয্যাশায়ী এই মানুষটি এখন চরম দুরবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। নেই পর্যাপ্ত খাদ্য, নেই চিকিৎসার টাকা।
জীবিকার একমাত্র অবলম্বন ছিল একটি চার্জার ভ্যান। অসুস্থ হওয়ার পর চিকিৎসার খরচ জোগাতে বাধ্য হয়ে সেই ভ্যানের ব্যাটারি বিক্রি করেছেন। স্ত্রী তার গহনা বিক্রি করেছেন, এমনকি মানুষের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা ধার নিয়েছেন অপারেশন ও কিছুদিনের চিকিৎসার খরচ মেটাতে। কিন্তু এত কিছুর পরও সুস্থ হওয়া দূরের কথা, দিন দিন তার অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে।
এখন তাদের ঘরে নেই খাবার, নেই চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ। অসহায় সাজু মিয়া সারারাত যন্ত্রণায় ছটফট করেন, আর দিনে সারাদিন কাঁদেন।
স্ত্রী মোছা.মৌসুমী বেগম চোখের পানি মুছে বলেন,একজন নারীর স্বামীই তার আসল অলংকার। আমার স্বামী যদি দুনিয়াতে না থাকে, তাহলে কাকে নিয়ে আমি বাঁচব? তাকে সুস্থ করার জন্য মানুষের কাছে হাত পেতেছি, ভিক্ষা চেয়েছি। আমার একটি কন্যা সন্তান আছে, সেও প্রতিবন্ধী। আমি একজন নারী হয়ে কিভাবে এত খরচ চালাই? কোথায় পাই এই টাকা? অনেক বিত্তবান ব্যক্তির কাছেও গিয়েছি, কিন্তু কোথাও থেকে সাহায্য পাইনি।
অসুস্থ সাজু মিয়া নিজেও দেশবাসীর কাছে কাঁদতে কাঁদতে সাহায্যের আবেদন করেছেন। তিনি বলেন,আমি বাঁচতে চাই। দয়া করে আমার জীবন বাঁচান। একজন পুরুষ মানুষের পক্ষে কাঁদতে কাঁদতে ভিক্ষা চাওয়া লজ্জার, কিন্তু আমি আজ জীবন বাঁচানোর জন্য সবার কাছে হাত পেতেছি।
পরিবার ও স্থানীয়রা বলছেন, অবিলম্বে চিকিৎসার ব্যবস্থা না হলে সাজু মিয়ার জীবন রক্ষা করা কঠিন হবে। মানবিক সহায়তার জন্য সমাজের বিত্তবান ও দয়ালু মানুষদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।