শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ০৬:১১ অপরাহ্ন
ফেনীতে গত তিনদিন টানা বৃষ্টির পানি এবং ভারতীয় উজানের পানির কারণে সিলোনিয়া, কুহুয়া ও মুহুরী নদীর পানি বেড়ে চলছে। ইতিমধ্যে মুহুরী নদীর পানি বিপদ সীমার ১২.৫৫ সে.মি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। বৃষ্টি বন্ধ না হলে অন্যান্য নদীগুলোর পানি আরো বাড়তে পারে বলে পাউবো সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, গেল বন্যার ৮ মাস না পেরোতেই আবার ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী এলাকায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পরশুরাম ফুলগাজীর সিলোনিয়া, কহুয়া ও মুহুরী নদীর পানি বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বাঁধের কয়েকটি স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিকেলে পরশুরামের সুবার বাজার থেকে দক্ষিণে সুইচ গেটে সঙ্গে মুনাফ ও দুলালের বাড়ির পাশে সিলোনিয়া নদীর পশ্চিমপাশের অংশে পাড় ভেঙে দক্ষিণ মনিপুর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
এ ছাড়া বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে ফুলগাজীর উত্তর বরইয়া বনিক পাড়া সংলগ্ন এলাকায় মুহুরি নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এভাবে টানা বৃষ্টি হলে রাতের মধ্যে পানির প্রবাহ বাড়লে কয়েকটি গ্রামে বন্যার পানি বাড়ি-ঘরে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।
ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান কালের কণ্ঠকে জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ফেনীতে ৬১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আহ শুক্রবার রাত থেকে বৃষ্টিপাত কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
জানা যায়, ২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যায় ভেঙে যাওয়া বাঁধের মেরামতের কাজ সম্পন্ন হওয়ার আগেই কয়েকটি স্থানে ফাটল ধরেছে। ইতিমধ্যে গত বন্যার পর আট মাস পার হয়ে গেলেও মেরামতের কাজ শেষ করতে পারেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড।
প্লাবন ও বন্যার আশঙ্কায় নির্ঘুম রাত পার করতে হচ্ছে নদীগুলো তীরবর্তী বসবাসকারী ৩০/৪০ হাজার মানুষকে।
গত বৃহস্পতিবার(১৯ জুন) দুপুরে সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধের কয়েকটি স্থানে বাঁধ ভেঙে পরশুরাম উপজেলা মির্জানগর ইউনিয়নের মনিপুর ও সুবার বাজার সংলগ্ন কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়ে যাওয়ায় মানুষের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। ফলে এসব এলাকায় বন্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
পাউবোর উপ সহকারী প্রকৌশলী মো. ফাহাদ্দিস হোসাইন বলেন, ‘উজানে ভারী বৃষ্টি হওয়ায় নদীর পানি বাড়ছে। তবে মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার উপরে রয়েছে।
বাঁধের ভাঙ্গনস্থল রক্ষায় স্থানীয়দের নিয়ে অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের নিরাপত্তায় আমাদের কাজ অব্যাহত রয়েছে।’
এদিকে, ইতিমধ্যে এ বাঁধ পুনর্নির্মাণের জন্য সরকার ২০ কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে। কিন্তু নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার আগেই বাঁধে ফাটল ধরে। টানা দুদিনের বৃষ্টিতে জমাট বাধা ও উজানের পানিতে অসমাপ্ত বাঁধগুলির কয়েকটি স্থানে ফাটল লোকালয়ে পানি ঢুকছে।
অতিরিক্ত পানির চাপে ফাটল স্থানে ভেঙে যাওয়ায় বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়। বৃষ্টি বন্ধ না হওয়ায় পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলায় আবার বন্যা ও প্লাবনের শঙ্কায় মানুষ আতংকে দিন কাটছে।
