১৫ টি ইউনিয়ন এবং ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত হয়েছে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা। এখানে নিবন্ধিত গাভীর খামার রয়েছে ৪৫ টি এবং অনিবন্ধিত গাভীর খামার রয়েছে ১৩০০ টি নিবন্ধিত ছাগলেরখানা রয়েছে ১ টি অনিবন্ধিত ছাগলের খামার রয়েছে ৮১ টি, অনিবন্ধিত ভেড়ার খামার রয়েছে ১৫ টি এই খামারগুলোতে গরুর সংখ্যা রয়েছে ৩১ লক্ষ ২৫ হাজার ০৭ টি ,মহিষ রয়েছে ৫০০ টি, ছাগল রয়েছে ১২ লক্ষ ১২ হাজার ১০ টি, ভেড়া রয়েছে ২২ হাজার ৭ শত ২০ টি , অথচ উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে ১১টি পদের ৬ টি পদে লোক নিয়োগ থাকলেও কর্মস্থলে উপস্থিত ৪ জন ৫ টি পদ শূন্য।
পীরগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেনারি হাসপাতালে ১ জন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, ১ জন ভেটেরিনারি সার্জন, ১ জন উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ( কৃত্রিম প্রজনন) এফ এ (এআই),১ জন উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ( প্রাণী স্বাস্থ্য) কমপিউটার, ৪ জন উপসহকারী প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ( সম্প্রসারণ) ভি এফ এ, ১ জন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক , ১ জন অফিস সহায়ক,১ জন ড্রেসার সহ মোট ১১ জন থাকার কথা।
কিন্তু বাস্তবে উল্টো পথে হাঁটছে পীরগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেনারি হাসপাতাল। কর্মস্থলে সংযুক্ত রয়েছেন ৬ জন এর মধ্য থেকে হরি প্রিয়া সরদার নামে এক জন উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (সম্প্রসারণ) (ভিএফএ) রয়েছেন প্রশিক্ষণে এবং ড্রেসার পদে থাকা শ্রী রিপন কুমার নামের ব্যক্তিটি প্রথম থেকেই সংযুক্ত রয়েছেন ঢাকা চিড়িয়াখানায়।
এ হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৪০ থেকে ৫০ জন পশু লালন-পালনকারী বা খামারি তাদের অসুস্থ পশু নিয়ে আসেন। বর্তমানে এই উপজেলার অসুস্থ গৃহপালিত পশু-পাখিদের চিকিৎসার এখন একমাত্র ভরসা ভেটেরিনারি সার্জন, এই কর্মকর্তা ছাড়া আর কেউ দায়িত্বে না থাকায় জরুরি প্রয়োজন বা চিকিৎসার কাজে তিনি হাসপাতালের বাইরে গেলে বন্ধ থাকে চিকিৎসা সেবা। ফলে লোকবল কম থাকায় হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
হাসপাতালের কয়েকজন সেবা গ্রহীতার সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, হাসপাতালে লোকবল কম থাকায় ভালো সেবা পাওয়া যায় না। আবার অনেক সময় অসুস্থ গরু-ছাগল নিয়ে এসে ডাক্তারের জন্য বসে থাকতে হয়। লোকবল বেশি হলে আমরা উপকৃত হব।
হাসপাতাল টিতে দীর্ঘ দিন ধরে উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ( কৃত্রিম প্রজনন) এফ এ (এআই) এবং উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ( প্রাণীস্বাস্থ্য) কম্পাউন্ডার পদটিও শুন্য রয়েছে এই চিকিৎসকদের সহায়তাকারী ড্রেসারের পদে শ্রী রিপন কুমার নামে একজন নিয়োগপ্রাপ্ত থাকলেও সংযুক্তি দেখানো হয়েছে জাতীয় চিড়িয়াখানায় অথচ নিয়মিত বেতন ভাতা তিনি তুলছেন পীরগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের মাধ্যমে। অপরদিকে উপ সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (সম্প্রসারণ) ভিএিএ পদে ৪ জন থাকার কথা থাকলেও ২ জনের পদ শুন্য, ১ জন প্রশিক্ষণে অপর আরেকজন রয়েছেন কর্মস্থলে, বর্তমানে ৩ জন অন উপস্থিত । অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে একজন থাকার কথা থাকলেও সে পদেও কোন লোক নেই।
ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মোঃ মিজানুর রহমান বলেন অসুস্থ প্রাণীর চাপ বেশি থাকায় একার পক্ষে সেবা দেওয়া কষ্টকর। অনেক সময় বড় প্রাণীদের হাসপাতালে আনা সম্ভব হয় না, সেক্ষেত্রে বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসা দিতে হয়। তখন হাসপাতাল ফাঁকা থাকে। হাসপাতালে ২ থেকে ৩ জন ভেটেরিনারি সার্জন থাকলে উপজেলাবাসীসহ আমাদের সবার জন্য ভালো হতো।
উপজেলা চতরা ইউনিয়নের রথীন্দ্রনাথ এসেছেন তার পালিত গরুর চিকিৎসা নিতে। এসে দেখেন হাসপাতাল ফাঁকা। চিকিৎসক নেই, তিনি বলেন, ‘প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে জনবল সঙ্কটের কারণে যথা সময়ে সেবা পাচ্ছিনা আমরা। আমরা চাই, দ্রুত জনবল নিয়োগের মাধ্যমে সেবার মান বৃদ্ধি করা হোক।
পীরগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. ফজলুল কবীর বলেন, আমি কিছু দিন আগে এখানে যোগদান করেছি। এখানে ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ থাকলেও বর্তমানে ৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মস্থলে নিয়মিত রয়েছে। বাকি পদগুলো শূন্য রয়েছে।
অল্প সংখ্যক লোক দিয়েই সাময়িকভাবে সেবা অব্যাহত রাখলেও অনেক সময় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। জনবল সংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সমস্যা সমাধান হবে।