পঞ্চগড়ে ছাত্রদল কর্মীর ছুরিকাঘাতে জাবেদ ওমর জয় (১৯) নামে এক ছাত্রদলের এক কর্মী নিহত হয়েছে।
বুধবার সাড়ে ৮টার দিকে পঞ্চগড় জেলা শহরের সিনেমা হল মার্কেটের সামনে এই ঘটনা ঘটে। ছুরিকাঘাতের পর স্থানীয়দের সহযোগিতায় জয়কে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নেয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
পরে বোদা উপজেলা শহর এলাকায় গেলে জয়কে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। পরে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত জয় জেলা শহরের পুরাতন ক্যাম্প এলাকার জহিরুল হকের ছেলে। তিনি ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার কলেজিয়েট ইন্সটিটিউট থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। জয় পঞ্চগড় পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সদস্য বলে জানা গেছে। এছাড়া শহরের কদমতলা এলাকায় সূচনা ফল ঘরে ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
এদিকে, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে, শহরের সকল দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। একই সাথে জয় হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। আসামী গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত ওই ছাত্রদল কর্মীর মরদেহ দাফন করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
তবে শহরে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। কাজ করছে সেনাবাহিনীও।
পুলিশ জানায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ছাত্রদলের কর্মী জাবেদ ওমর জয়ের গ্রুপের সাথে শহরের নতুনবস্তি এলাকার ছাত্রদলের আরেক কর্মী ফারাজ ইসলাম আল আমিন গ্রুপের মধ্যে বুধবার দুপুর থেকে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়।
রাতে জয় একাই জেলা শহরের সিনেমা হল মার্কেটের সামনে গেলে সেখানে প্রতিপক্ষের ১০/১২ জনের সাথে আবারো বাক বিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে ফারাজ ইসলাম আল আমিন ছুরিকাঘাত করে জয়ের পেটে।
এতে তার ভুড়ির কিছু অংশ বের হয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। পরে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক জয়কে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের বড় ভাই আশরাফ বলেন, রাতে মোটরসাকেল নিয়ে তিনজন জয়কে খুঁজতেছিল। আমিও তাকে না পেয়ে দোকানে চলে যাই। এরপর একটা ফোন পেয়ে জানতে পারি জয়কে ছুরি মারা হয়েছে, তার ভুড়ি বের হয়ে গেছে। শুনে দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর রংপুরে নেওয়ার পথেই সে মারা যায়। প্রকাশ্যে এই হত্যার আমরা উপযুক্ত বিচার চাই।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের চিকিৎসক রেজওয়ানুল্লাহ বলেন, জয় নামে এক যুবকের পেটের বাম পাশে ছুরিকাঘাতের ফলে ভূড়ি বের হয়ে গিয়েছিল।
তার একটি হাতেও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তার অবস্থা গুরুতর ছিল। আমরা জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা শেষে রংপুরে পাঠানোর পরামর্শ দেই।
পরে মারা গেছেন বলে শুনেছি পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শইমী ইমতিয়াজ বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের আঘাতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। আল আমিন ও পারভেজ সহ কয়েকজন ঘটনার সাথে জড়িত বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে।
তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মরদেহ ভিকটিমের বাসাতেই রয়েছে। দ্রুত সময়ে মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য আনা হবে।