নিজের সন্তান নয়, তবুও তাদেরকেই আগুনের মধ্য থেকে টেনে এনেছিলেন মায়ের মতো করে। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষিকা মাহেরীন চৌধুরী আর নেই। ঢাকায় এক দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে গিয়ে নিজেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। আজ তাঁর দাফন হয়েছে নীলফামারীর জলঢাকায়। তাঁর প্রতি ভালোবাসা জানাতে উপস্থিত ছিলেন হাজারো মানুষ।
রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়ি মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষিকা মাহেরীন চৌধুরীর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বিকেল চারটায় নীলফামারীর জলঢাকার বগুলাগাড়ী স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে জানাযা শেষে তার বাবা-মায়ের কবরের পাশে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এতে শোকের মাতম শুরু হয়েছে এলাকাজুড়ে।গতকাল দুপুরে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর প্রভাব পড়লে সুস্থ মাহেরীন চৌধুরী উদ্ধার করতে যায় শিক্ষার্থীদের। এসময় তিনি কয়েকজন শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে নিজেই অগ্নিদগ্ধ হয়। পরে ঢাকার একটি হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যায়। তিনি শেষ সময়ে তার স্বামী মনসুর হেলালের সাথে কথা হয়ে। এসময় বলেছেন, নিজেদের জীবন বাজি রেখে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করতে পেরেছি। তারাও তো আমার সন্তান। তবে শেষে তিনি একটু খেতে চেয়ে ছিলেন।
এলাকাবাসীও বলছেন, শিক্ষকতার পাশাপাশি গ্রামে এসে সমাজ সমাজসেবাও করেছেন। এলাকাবাসী হারালেন একজন সাদা মনের মানুষ। এছাড়াও তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি তার বাবার এলাকায় এসে জনগণের সেবা করতে। গত ২২জুন বগুলাগাড়ী স্কুল এন্ড কলেজের এডহক কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। জুলাইয়ের ২৮তারিখে আবারো প্রতিষ্ঠানটিতে আসার কথা ছিল তার। সেই প্রতিষ্ঠানে আসলেন কিন্তু নিথর দেহ নিয়ে। সেই প্রতিষ্ঠানের মাঠে হলো জানাযা।
মাহেরীন চৌধুরী ১৯৭৯ সালে ৬ জুলাই জন্মগ্রহণ করেছিলেন ঢাকার উত্তরায়। শিক্ষাজীবনে তিনি ১৯৯৫ সালে এসএসসি ও ১৯৯৭ সালে এইচএসসি করেন রাজধানীর শাহীন স্কুল এন্ড কলেজ থেকে। পরে তিনি তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে অনার্স ও মানারাত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এর পর থেকেই মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে শিক্ষিকতার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।