নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে নেই চন্দনপাঠ কওমি হাফিজিয়া এতিমখানা মাদরাসা নেই শিক্ষার্থী তবুও পেয়েছে বরাদ্দ। বরাদ্দের টাকা উত্তোলন করা হয়েছে তবে সেটি কোন এতিমখানায় ব্যবহার করা হয়নি। এতিম ও দুস্থ শিশুদের জিআর খয়রাতি চালের আবেদনে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ টিআরও প্রকল্পে এ প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করে তিন মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে অভিযোগ এ নামে কোন প্রতিষ্ঠান না থাকলেও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা লতিফুর রহমানের যোগসাজশে বরাদ্দ উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, অফিস সহকারী লিটন ইসলামের সহায়তায় বড়ভিটা ইউনিয়নের পেট্রোল পাম্প এলাকার বাসিন্দা ও জান্নাতুল বানাত মহিলা মাদরাসার মোহতামিম সোয়াইব ইসলাম চন্দনপাঠ কওমি হাফিজিয়া এতিমখানা নামে একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর এতিম ও দুস্থ শিশুদের জন্য জিআর খয়রারি চালের আবেদন করেন। পরে সেই প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ছাড়াই তিন মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। বরাদ্দ দেওয়া হলেও আবেদনকারীকে সেই বরাদ্দ না দিয়ে পুরোটাই আত্মসাৎ করেছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা(পিআইও) লতিফুর রহমান।
২০২৪ -২০২৫ অর্থ বছরে চন্দনপাঠ কওমি হাফিজিয়া এতিমখানা নামে ভুয়া মাদরাসা দেখিয়ে এ তিন মেট্রিক চাল উত্তোলন করা হয়। তবে অফিস সহকারী লিটনের সহায়তায় কাজ করা সোয়াইব ইসলাম বরাদ্দের কোন অংশ না পেলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এতে অফিস সহকারী লিটন সোয়াইব ইসলামকে হুমকি দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেন।
এ বিষয়ে আবেদনকারী সোয়াইব ইসলাম বলেন, আমি বড়ভিটায় বানাত মহিলা মাদরাসা নামে একটি প্রতিষ্ঠান চালাই সেখানে প্রায় ২৮জন শিক্ষার্থী ছিলো এখন মেরামত কাজের জন্য কয়েকমাস থেকে মাদরাসাটি বন্ধ রয়েছে। আমি গত বছরে টিআর বরাদ্দে আবেদন করে ৫০০ কেজি চাল সহায়তা পেয়েছিলাম। এবার আবেদন করতে গেলে সেখানের অফিস সহকারী লিটন ইসলাম বলেন এক মাদরাসায় বারবার বরাদ্দ দেওয়া যাবে না। তিনি আমাকে বলে ভুয়া একটি প্রতিষ্ঠানের নাম দেখিয়ে আবেদন করেন। পরে আমি ভুয়া একটি প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করি। আবেদন করার পরে আমাকে তিন মেট্রিক চাল বরাদ্দ দেওয়া হয় কিন্তু আমি ভেবেছিলাম লিটনকে কিছু দিয়ে বাকিটা তুলে এনে আমার মাদরাসার কাজ করাবো। তবে লিটন বরাদ্দ আসার পরে আমাকে কোনভাবেই তুলতে দেয়না। আমার বরাদ্দ নিয়ে আসতে ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে সেটা লিটন আর সিহাব নামে এক ব্যাক্তির মাধ্যম ঘুস দিয়েছিলাম। কিন্তু যখন বরাদ্দ আসলো আমাকে আর কিছু দেয়নি৷ বরাদ্দ কিভাবে উত্তোলন হলো আমি আর এসব বিষয়ে কিছু জানিনা। লিটন শুধু আমাকে খরচের ৭০ টাকা হাজার টাকা ফেরত দিয়েছে বাকি আর কোন টাকা দেয়নি। পরে আমি বরাদ্দ আনতে গেলে সে আমাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেয় এজন্য আমি ভয়ে আর সেখানে যাইনি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যলয়ের অফিস সহকারী লিটন ইসলাম বলেন, সেখানে এ নামে কোন মাদরাসা নাই। এবিষয়ে যিনি আবেদন করেছেন তাকে আমি চিনিনা। তিনি আমাকে টাকা দেওয়ার কথা মিথ্যা বলেছে। এ বরাদ্দ উত্তোলন করা হয়েছে সেটা পিআইও স্যার ভালো করে জানেন৷ আমরাতো আর বরাদ্দ উত্তোলন করতে পারিনা। এটা পিআইও স্যার উত্তোলন করে কি করেছে সেটা তিনি জানেন আপনি এবিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলুন।
এবিষয়ে কিশোরগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা(পিআইও) লতিফুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।
নীলফামারী জেলা ত্রান ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন বলেন, যদি এমন কোন ভূয়া প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে বরাদ্দ উত্তোলন কেউ করে থাকেন। আমরা এবিষয়ে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহন করবো।