নীলফামারীর সৈয়দপুরে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ভবঘুরের গাঁটরি ও পোশাকের ভেতর থেকে উদ্ধার হয়েছে সাড়ে তিন লাখের বেশি নগদ টাকা। পরে সেই টাকা থানার মাধ্যমে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার জিম্মায় রাখা হয়েছে।
জানা গেছে, প্রায় ৪০ বছর ধরে সৈয়দপুর জিআরপি স্টেশন এলাকায় ভবঘুরে হিসেবে দিন কাটাচ্ছিলেন গণি মিয়া নামের ওই ব্যক্তি। স্থানীয়রা তাকে ভালোবাসতেন, খাবার দিতেন, অনেকে নগদ টাকাও দিতেন। সবই তিনি নিজের গাঁটরি ও শরীরে লুকিয়ে রাখতেন।
শনিবার বিকেলে ‘হিউম্যানিটি বাংলাদেশ’ নামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা তাকে গোসল করাতে গিয়ে পোশাকের বিভিন্ন স্থানে ও ব্যাগে টাকা দেখতে পান। পরে থানা-পুলিশ ও সমাজসেবা কর্মকর্তার উপস্থিতিতে টাকা গণনা করা হয়। তাতে ১ হাজার টাকার নোট ১২৬টি, ৫০০ টাকার নোট ৩৫০টি এবং বিভিন্ন অঙ্কের নোট মিলিয়ে মোট ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৫২ টাকা পাওয়া গেছে। অনেক ছেঁড়া-ফাটা টাকা হিসাবের বাইরে রাখা হয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাংবাদিকরা জানান, গণি মিয়া দীর্ঘদিন ধরে জিআরপি এলাকায় থাকেন। শীত-গরম, ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে প্রায় ৩০ কেজি ওজনের গাঁটরি বহন করে তিনি ঘুরে বেড়াতেন। অনেকে খাবার ও অর্থ দিয়ে সহায়তা করতেন।
গণি মিয়া দাবি করেন, তিনি ১৯৬৬ সাল থেকে সৈয়দপুরে এভাবে আছেন। তার বাবার নাম আইয়ুব। বাসা কোথায় জানতে চাইলে তিনি জানান, রংপুরের আলমনগর এলাকার রবার্টসনগঞ্জ মহল্লায়। তার ভাষ্য, মানুষজন যা দিত, তা তিনি এভাবে জমা রাখতেন।
এ বিষয়ে সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফইম উদ্দীন বলেন, ওই লোক মূলত শহরের জিআরপি এলাকায় বেশির ভাগ সময় থাকেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নগদ টাকা ও সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকসহ অন্য ব্যক্তিদের সামনে থানায় সেই টাকা গণনা করে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৫২ টাকা পাওয়া যায়। পরে সেই টাকা উপজেলা সমাজসেবার কর্মকর্তা রশিদুল ইসলামের কাছে আমানত হিসেবে রাখা হয়েছে।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রশিদুল ইসলাম বলেন, ‘টাকা আমাদের কাছে গচ্ছিত আমানত হিসাবে রাখা হয়েছে। ওনার টাকা ওনার কল্যাণে কীভাবে ব্যয় করা যায় কিংবা ওনার কাছে কীভাবে নিরাপদ রাখা যায়, সেটা আমরা দেখছি।