বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচন হতে হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য। নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে হতে হবে নিরপেক্ষ। কালো টাকার খেলা ও মাস্তানতন্ত্র বরদাশত করা হবে না।’
বুধবার (২৩ জুলাই) সিলেটের বিয়ানীবাজারে জনশক্তি ও সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা অতীতের মতো বস্তাপচা নির্বাচন চাই না, এমন নির্বাচন মেনেও নেব না। নির্বাচন হতে হবে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে। নির্বাচনে কালো টাকার প্রভাব ও মাস্তানতন্ত্র বন্ধ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছরে দেশ থেকে পাচার হয়েছে প্রায় ২৬ লাখ ৫৮ হাজার কোটি টাকা, যা দেশের বার্ষিক বাজেটের পাঁচ গুণ। এই অর্থ দেশে থাকলে দেশ অনেক দূর এগিয়ে যেত। শুধু কথায় নয়, কাজে প্রমাণের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে তনি বলেন, দুর্নীতিমুক্ত, মানবিক ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়াই আমাদের লক্ষ্য।’
দুর্নীতি কমলেই বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যাবে। দুর্নীতি মানেই শুধু ঘুষ বা চাঁদা নয়, এর বাইরে রয়েছে বুদ্ধিবৃত্তিক দুর্নীতি, যা আরও ভয়াবহ। ক্ষমতায় থাকাকালে তারা নিজেদের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে মনে করে, আর সংকট দেখা দিলেই দেশ ছেড়ে পালায়।’
তিনি বলেন, “আমাদের কারও বিদেশে কোনো ‘বেগমপাড়া’ নেই। কিন্তু যারা বছরের পর বছর ক্ষমতায় ছিল, তাদের সম্পদের হিসাব নেই। অথচ ৫ আগস্টের পর আমরা দেখেছি নিবন্ধন বাতিল, প্রতীক কেড়ে নেওয়া, খুন-গুম, নিষিদ্ধ ঘোষণা। এসবের মধ্যেও আমরা জাতিকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছি।”
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের একসময় বলেছিলেন, ক্ষমতা হারালে পাঁচ লাখ মানুষ হত্যা করা হবে। কিন্তু আমরা ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর সারা দেশে পাহারা বসিয়েছি। আমরা কোনো প্রতিশোধে বিশ্বাস করি না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু কথায় বিশ্বাস করি না, কাজের মাধ্যমেই প্রমাণ দিই। জুলাই যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছি। মাসের প্রথম তারিখে তাদের নিয়মিত সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছি। নারায়ণগঞ্জের শহীদ সুমাইয়ার মেয়ে সুবাইতার দায়িত্ব আমরা নিয়েছি।’
নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা অতীতের মত বস্তাপঁচা নির্বাচন চাই না, মেনেও নেব না। চাই সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করে অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। কোনো প্রি-ম্যাচিউর্ড ডেলিভারি নয়, আমরা চাই শক্তিশালী গণতন্ত্র। স্থানীয় সরকার নির্বাচন এবং প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করাও আমাদের অন্যতম দাবি।’
বক্তব্যের শেষে তিনি বলেন, ‘আমরা গড়তে চাই মানবিক, বৈষম্যহীন ও দুর্নীতিমুক্ত একটি বাংলাদেশ। যেখানে থাকবে ন্যায়বিচার, থাকবে না অনিয়ম বা অন্যায়।