জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাককানইবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ১৯তম ব্যাচের নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করা হয়েছে। রোববার (১৭ আগস্ট) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ভবনে কেন্দ্রীয় ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নবীনবরণের মূল আয়োজন শুরু হয়।
নতুন শিক্ষার্থীদের আগমনে সকাল থেকেই মুখরিত হয়ে ওঠে ৫৭ একরের সবুজ ক্যাম্পাস। চুরুলিয়া মঞ্চ, জয়ধ্বনি মঞ্চ, চক্রবাক ক্যাফেটেরিয়া, নজরুল ভাস্কর্য, চারুদীপ, টিএসসি, সিঙ্গারা হাউজ ও বটতলাসহ সব জায়গাতেই ছিল নবীনদের পদচারণা। রঙিন কাগজ, আলপনা ও ব্যানারে সেজে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। সিনিয়ররা নবীনদের ফুল, কলম, মিষ্টি, ব্যাগ ও নানা উপহার দিয়ে বরণ করে নেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫ বিভাগের প্রায় প্রতিটিই নিজস্ব উদ্যোগে নবীনবরণ অনুষ্ঠান আয়োজন করে। কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল, ফিল্ম ও মিডিয়া স্টাডিজ, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য, সঙ্গীত, চারুকলা, থিয়েটার ও পারফরম্যান্স স্টাডিজ, অর্থনীতি, আইন ও বিচার বিভাগসহ অধিকাংশ বিভাগে ছিল জমজমাট আয়োজন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম নবীনবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, “আমরা যদি আমাদের ভবিষ্যৎকে উন্নত করতে চাই তবে সময়কে গুরুত্ব দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে সবসময় নতুন কিছু ভাবতে হবে এবং নতুনত্ব বের করার চেষ্টা করতে হবে। পৃথিবী প্রতিযোগিতার মঞ্চ, তোমরা প্রত্যেকেই একজন প্রতিযোগী। শুরুটা হতে হবে দৃঢ় ও ইতিবাচক।”
নবীন শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাসও ছিল চোখে পড়ার মতো। চুয়াডাঙ্গা থেকে আসা পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী সুমনা ইয়াসমিন বলেন, “নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। আজ এখানে এসে সত্যিই ভালো লাগছে। বিষয়টি ভালোভাবে শিখে দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা নিতে চাই।”
আইন বিভাগের এক নবীন শিক্ষার্থী জানান, “আজকের অনুষ্ঠানটি দারুণ ছিল। গিফট পেয়ে খুশি হয়েছি। ছায়াঘেরা সবুজ ক্যাম্পাস দেখে মন ভরে গেছে।”
শাহরিয়ার নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “প্রথমে কোথায় থাকবো সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তা ছিল, কিন্তু সিনিয়রদের সহায়তায় সব সহজ হয়ে গেছে। এখন মনে হচ্ছে পরিবার থেকে দূরে থাকলেও নতুন একটা পরিবার পেয়ে গেছি।”
একজন অভিভাবক বলেন, “আমাদের সন্তানের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় শুরু হলো আজ। সুন্দর পরিবেশ, ভালো যোগাযোগব্যবস্থা আর শিক্ষার সুযোগ সব মিলিয়ে আমরা আশাবাদী।”
নবীন শিক্ষার্থীদের পদচারণায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ যেন পরিণত হয় এক উৎসবের মেলায়। সিনিয়রদের আয়োজনে প্রাণচাঞ্চল্যে ভরে ওঠে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়।