দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে। দুর্ঘটনার সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছর মার্চে ৫৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৬১২ জন নিহত এবং ১ হাজার ২৪৬ জন আহত হয়েছেন। গত বছরের একই মাসের তুলনায় প্রাণহানির সংখ্যা ৪৭টি বেশি। গত বছরের মার্চে ৫৫২টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে নিহত হন ৫৬৫ জন, আহত ১২২৮ জন। দুর্ঘটনা ও হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনাও বেড়েছে। গত বছর যেখানে ১৮১ দুর্ঘটনায় ২০৩ জন নিহত ও ১৬৬ জন আহত হয়েছিলেন, এবার সেখানে ২২৭টি দুর্ঘটনায় ২৫১ জন নিহত এবং ২০৮ জন আহত হয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি এসব তথ্য জানায়। জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্র থেকে তারা এসব তথ্য সংগ্রহ করেছে। সংগঠনটি তাদের প্রতিবেদনে জানায়, মার্চে মোট দুর্ঘটনার ৩৮ দশমিক ২৭ শতাংশ ঘটেছে মোটরসাইকেলে, যা মোট নিহতের ৪১.০১ শতাংশ এবং আহতের ১৬.৬৯ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে, ১৪৮টি। এসব দুর্ঘটনায় ১৫০ জন নিহত ও ৩৬৪ জন আহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে বরিশাল বিভাগে; ৩১টি। এসব দুর্ঘটনায় ৩১ জন নিহত ও ৮৬ জন আহত হয়েছেন।
যাত্রী কল্যাণ সমিতি জানিয়েছে, দুর্ঘটনার ৫১.২৬ শতাংশ গাড়িচাপার ঘটনা, ২২.৫৯ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৭.২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ০.১৬ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে, ৭.৯২ শতাংশ বিবিধ কারণে ও ০.৮৪ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষে ঘটেছে।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণ করে বলা হয়, মার্চে দুর্ঘটনার ৩৪.২৩ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২৩.৪৪ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩৭.২৬ শতাংশ ফিডার রোডে ঘটেছে। সারাদেশে সংঘটিত দুর্ঘটনার ৩.৫৪ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ০.৬৭ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০.৮৪ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে ঘটেছে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী সমকালকে বলেন, ‘মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত যানবাহন বিরাট সমস্যা আকারে দেখা দিয়েছে। দেশে সড়ক পরিবহনের নীতি সহায়তা নিয়ে কোনো কমিশন গঠন হয়নি। এটা করা দরকার ছিল। তবে কমিশন ছাড়াও যে সংস্কার করা যায় না, তা নয়। সড়কের সার্বিক সংস্কার প্রয়োজন। এসব সংস্কার ছাড়া স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী হবে।’