দেশে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে পঞ্চম প্রজন্মের প্রযুক্তি বা ফাইভ-জি সেবা চালু করলো মোবাইল অপারেটর রবি। আপাতত ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের প্রায় সাতটি স্থানে এই সুবিধা পাওয়া যাবে। এর ঘণ্টাখানেকের মধ্যে গ্রামীণফোন ভিডিও বার্তায় ফাইভ-জি সেবা চালুর ঘোষণা দেয়।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) যাত্রা শুরুর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সরকারি ফয়েজ আহমদ তৈয়ব। এ সময় অন্যান্য অপারেটরকেও ৫জি প্রযুক্তি সেবা নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে মোবাইল সেবায় দেশ আটকে আছে ফোর-জি প্রযুক্তিতে। এই দীর্ঘ সময়ে মুঠোফোন ব্যবহারকারীর প্রায় ৬০ শতাংশের হাতে আছে এখন ফোর-জি হ্যান্ডসেট। সে বিবেচনায় ফাইভ-জি হ্যান্ডসেটের পরিমান প্রায় নগণ্য, খুব বেশি হলে সাত শতাংশ।
তবে হ্যান্ডসেটের বিস্তার কম হলেও সেবা এগিয়ে নিতে চায় মোবাইল অপারেটর- রবি। বাণিজ্যিকভাবেই তারা চালু করে দিলো ফাইভ-জি। এখন ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের সাতটি জায়গার গ্রাহকরা নিচ্ছেন রবি ফাইভ-জির অভিজ্ঞতা। সোমবার প্রতিষ্ঠানটির কর্পোরেট অফিসে এই সেবার উদ্বোধন করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এবং বিটিআরসির চেয়ারম্যান এমদাদ উল বারী।
রবির চিফ কর্মাশিয়াল অফিসার শিহাব আহমেদ বলেন, যেসব স্থানে ইতোমধ্যে রবির ফাইভ-জি সেবা সক্রিয় করা হয়েছে সেগুলো হলো- ঢাকার ফকিরাপুল (পল্টন), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু এলাকা (শাহবাগ), মগবাজার চৌরাস্তা, চট্টগ্রামের খুলশি, সিলেটের সাগরদিঘীর পাড় এলাকা। এরিকসন ও হুয়াওয়ে রবির ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক তৈরিতে সহযোগিতা করেছে।
কোম্পানিটির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বলেন, আমরা গ্রাহক অভিজ্ঞতা নিচ্ছি এবং দেখছি যে ফাইভ-জি কতটুকু কাজ করছে। এই নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের বিষয়টি নির্ভর করবে গ্রাহক অভিজ্ঞতা এবং ফাইভ-জি উপযোগী ডিভাইসের ওপর।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের সাত জায়গায় ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক পাওয়া যাচ্ছে। তাদের গ্রাহকদের প্রায় ৬০ শতাংশের হাতে ফোর-জি মুঠোফোন আছে। অন্যদিকে ৬-৭ শতাংশের কাছে ফাইভ-জি মুঠোফোন আছে, কিছু জায়গায় ২০ শতাংশও আছে। যেসব জায়গায় ১৫-২০ শতাংশ ফাইভ-জি মুঠোফোন থাকবে, রবি সেখানে এ সেবা চালু করবে।
এই উদ্যোগকে রীতিমত ইতিহাস বলছেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান এমদাদুল বারি। তিনি জানান, এখন দীর্ঘ একটিভ শেয়ারিং প্রয়োজন। আর এজন্য টেলিকম নীতিমালার সংস্কার করা হচ্ছে। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সরকারি ফয়েজ আহমেদ তৈয়ব জানান, এখনো অনেকেই ২জির উপরে নির্ভর করছেন। তা থেকে অপারেটদের বের হওয়া উচিত।
অন্যদিকে, গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান ফেসবুকে ভিডিও বার্তায় বলেন, অত্যন্ত খুশির সঙ্গে জানাচ্ছি যে আমরা আজকে দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে ফাইভ-জি সেবা চালু করছি।
ফাইভ-জি সেবা স্মার্ট সিটি, টেলিমেডিসিন, এআর/ভিআর, ক্লাউড গেমিংসহ বহু উদীয়মান খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ফাইভ-জি সেবা পেতে গ্রাহকের হ্যান্ডসেট ফাইভ-জি উপযোগী হতে হবে। নেটওয়ার্ক সেটিংস থেকে ফাইভ-জি অপশন চালু করে নিতে হবে এবং যে এলকায় ফাইভ-জি চালু হয়েছে সেই এলাকার নেটওয়ার্কের আওতায় আসতে হবে। ফাইভ-জি সেবার জন্য সিম পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই।