আমন মৌসুমে সরকারের সঙ্গে চুক্তি না করায় দিনাজপুরের ৩১৬টি চালকলের লাইসেন্স বাতিল করেছে খাদ্য বিভাগ। মালিকপক্ষ বলছে, ধানের ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে লোকসান দিয়ে চাল সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। সরকারের কাছে আরেকবার সুযোগ চান তারা। তবে কেউ আবেদন করলে বিবেচনার আশ্বাস খাদ্য বিভাগের।
গত আমন মৌসুমে সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেনি দিনাজপুরের তিন শতাধিক চালকল। এ কারণে তারা কোনো চাল সরবরাহ করেনি সরকারি খাদ্য গুদামে। চলতি বছর এ নিয়ে কঠোর ব্যবস্থা নিলো খাদ্য বিভাগ। সম্প্রতি জেলার ৩১৬টি চালকলের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে বিভাগের পক্ষ থেকে।
লাইসেন্স বাতিলের পর চাল উৎপাদন করতে পারবে না কোন প্রতিষ্ঠান। মালিকপক্ষ বলছেন, ধানের ঊর্ধ্বমুখী দামের ফলে লোকসান দিয়ে চাল সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। তবে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার জন্য সরকারের কাছ থেকে আরেকবার সুযোগ চান মিল মালিকরা। তারা জানান, মিলগুলোতে অনেক শ্রমিক কাজ করে। মিল না চললে তাদের বেতন দেয়া যাবে না। এতে বেকার হয়ে পড়বে অনেক মানুষ। ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, চালকল বন্ধ করাতে মালিকপক্ষের সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন শ্রমিকরাও।
দিনাজপুর চালকল মালিক গ্রুপের সভাপতি মো. মোছাদ্দেক হুসেন বলেন, এভাবে মিল বন্ধ করা হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন মিল মালিকরা। পথে বসবেন এসব মিলের শ্রমিকরা।
দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক বলেন, বেশিরভাগ মিল মালিকই ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করেন। ফলে মিল বন্ধ থাকলে বিপদে পড়বেন তারা। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে শ্রমিকরাও।
এদিকে, এখনও কঠোর অবস্থানে খাদ্য বিভাগ। তবে, কেউ আবেদন করলে বিবেচনার আশ্বাস সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার। দিনাজপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা সুবীর নাথ চৌধুরী বলেন, লাইসেন্স বাতিলের পরও যদি কেউ ধান-চাল মজুত করে ও উৎপাদন কার্যক্রমে নিয়োজিত থাকে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
খাদ্যবিভাগের তথ্যমতে, দিনাজপুরের লাইসেন্স বাতিল হওয়া ৩১৬টি চালকলের মধ্যে ২৯৬টি সিদ্ধ ও ২০টি আতপ চালকল রয়েছে। আর এসব প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন অন্তত ১৭ হাজার শ্রমিক।