নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বর্তমান তফসিলে থাকা ৬৯টি প্রতীকের সঙ্গে নতুন আরও ৪৬টি প্রতীক যুক্ত করা হয়েছে। তবে এ তালিকায় ‘শাপলা’ রাখা হয়নি। এর ফলে কোনো রাজনৈতিক দল তাদের দলীয় প্রতীক হিসেবে শাপলা পাচ্ছে না। এ সিদ্ধান্তকে প্রহসনমূলক ও পক্ষপাতমূলক বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা। ইসির সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে বিষয়টি রাজনৈতিক ও আইনগতভাবে লড়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন তারা।
ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, কমিশনের তফসিলে প্রতীক যুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট কমিটি মোট ১৫০টি প্রতীক চূড়ান্ত করে। কমিশন ১৫০টির মধ্যে কাটছাঁট করে ১১৫টি প্রতীক তফসিলে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত দেয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১১৫টি প্রতীক আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে। এতে শাপলা নেই।
গত ২০ জুন দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য ইসিতে আবেদন করে এনসিপি। তারা প্রতীকে প্রথম পছন্দ হিসেবে ‘শাপলা’ চেয়েছিল। আবেদনে পছন্দের প্রতীকের তালিকায় শাপলা ছাড়াও ‘কলম’ ও ‘মোবাইল ফোন’ রাখার কথা জানিয়েছিল দলটি। এ তিন প্রতীকের মধ্যে ইসির নতুন তালিকায় রয়েছে কলম ও মোবাইল ফোন। ফলে বলা যায়, দলীয় প্রতীক হিসেবে মোবাইল ফোন অথবা কলম পেতে পারে এনসিপি।
দলটির নেতারা বলছেন, ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’ কর্মসূচি থেকে তিনটি প্রতীকের বিষয়ে সবচেয়ে বেশি জনসমর্থন পেয়েছে দলটি। জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে জনগণের পছন্দের মার্কা শাপলা, মোবাইল ফোন এবং কলম প্রতীক চেয়েছেন তারা। দলের প্রতীকের বিষয়ে জনগণের চাহিদাকে তারা প্রাধান্য দিয়েছেন। তবে শাপলাকে রাজনৈতিক দলের প্রতীক হিসেবে না রাখায় ইসির বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণের অভিযোগ তুলেছেন এনসিপি নেতারা।
নিবাচন কমিশন রাজনৈতিক দলের প্রতীকের মধ্যে শাপলা বরাদ্দ না রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন জাগো নিউজকে বলেন, আমরা বুঝতে চাই। নির্বাচন কমিশন যে ব্যাখ্যা দিয়েছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট নই। আমরা পরিষ্কার ব্যাখ্যা চাই যে, কী কারণে শাপলা প্রতীক হতে পারে না। কমিশন স্পষ্ট ব্যাখ্যা করেনি বরং গতানুগতিক ব্যাখ্যা দিয়েছে। জাতীয় প্রতীকের যেই ইস্যু দেখানো হচ্ছে কিন্তু শাপলা জাতীয় প্রতীক না। নির্বাচন কমিশন এখনই পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে।
প্রতীক নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে আজ রোববার বৈঠক করবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এ বিষয়ে সিইসির একান্ত সচিব মোহাম্মদ আশ্রাফুল আলম বলেন, তাদের রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় সময় দেওয়া হয়েছে। দলীয় প্রতীক নিয়ে আলোচনার জন্য সময় চেয়েছেন তারা।
গত ৯ জুলাই জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা সংশোধনের লক্ষ্যে প্রতীকের তফসিলে ১১৫টি প্রতীক সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। ওইদিনই যা আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠায়। তবে শাপলা প্রতীক তালিকায় রাখা হয়নি। এর আগে গত ২২ জুন এনসিপি নিবন্ধন আবেদন দাখিলের সময় শাপলা প্রতীক চায়। আবার তার আগে মাহমুদুর রহমানের নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্য ১৭ এপ্রিল একই প্রতীক চেয়ে আবেদন করে। দুই দলই শাপলা প্রতীক নিয়ে একাধিকবার বৈঠক করে ইসির সঙ্গে।