রংপুরের তারাগঞ্জে গণপিটুনিতে জামাতাসহ নিহত রূপলাল দাসের মেয়ের বিয়ের জন্য এক লাখ টাকা অনুদান দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল রানা নিহত রূপলালের স্ত্রী ভারতী রানী ও তাঁর সন্তানদের হাতে টাকার চেক তুলে দেন।
ইউএনও রুবেল রানা বলেন, রূপলালের মৃত্যুর ঘটনা হৃদয়বিদারক। তাঁর মৃত্যুতে পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। খোঁজখবর নিয়ে তাঁর মেয়ের বিয়ের জন্য উপজেলা পরিষদের তহবিল থেকে এক লাখ টাকার অনুদানের চেক দেওয়া হলো। পরিবারটির প্রতি অন্যান্য সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
এ সময় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে রূপলালের পরিবারকে তাঁর সৎকারের জন্য ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল বুধবার আরও ৫০ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হবে।
এর আগে উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরাপুর এলাকার মুচি রূপলাল দাসের মেয়ে নূপুর রানীর বিয়ের কথাবার্তা চলছিল মিঠাপুকুরের শ্যামপুর এলাকার লালচাঁদ দাসের ছেলে ডিপজল দাসের সঙ্গে। গত রোববার বিয়ের দিন-তারিখ ঠিক করার কথা ছিল। এ জন্য মিঠাপুকুর থেকে নিজের ভ্যান চালিয়ে রূপলালের ভাগনির স্বামী প্রদীপ লাল গত শনিবার ঘনিরামপুর গ্রামে রূপলালের বাড়ির দিকে রওনা হন। কিন্তু গ্রামের ভেতর দিয়ে রাস্তা না চেনায় প্রদীপ লাল কাজীরহাট এলাকায় এসে রূপলালকে মোবাইল ফোনে কল করেন।
সেখানে রূপলাল গিয়ে দুজনে ভ্যানে চড়ে ঘনিরামপুর গ্রামের দিকে রওনা হন। গত শনিবার রাত ৯টার দিকে তারাগঞ্জ-কাজীরহাট সড়কের বটতলা এলাকায় পৌঁছালে তাঁদের কয়েকজন যুবক চোর সন্দেহে পথ রোধ করেন। প্রদীপ লালের ভ্যানে থাকা বস্তা থেকে কয়েকটি প্লাস্টিকের ছোট স্পিডের ক্যানের বোতল ও ওষুধ বের করেন তাঁরা। একপর্যায়ে তাঁদের চোর আখ্যা দিয়ে পিটুনি দেন। এতে দুজনই মারা যান।
উল্লেখ্য যে, এ ঘটনায় রূপলাল দাসের স্ত্রী বাদী হয়ে ৫০০ থেকে ৭০০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে তারাগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ ভিডিও দেখে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।