সম্প্রতি রংপুরে সাংবাদিকদের নামে হওয়া মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, হুমকিদাতাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবিতে ডিআইজির কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাব। ৭ দিনের মধ্যে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে আন্দোলনে যাওয়ার কথা জানিয়েছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (৬ মে) বিকেলে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি মো. আমিনুল ইসলামের হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি আব্দুল আজিজ চৌধুরী সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক সরকার মাজহারুল মান্নানের নেতৃত্বে কার্যনির্বাহী পরিষদের নেতৃবৃন্দ।
স্মারকলিপিতে নেতৃবৃন্দ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সম্প্রতি অবৈধ ইটভাটা, ইউপি চেয়ারম্যান এবং কারিগরি প্রশিক্ষণ নিয়ে অনিয়মের সংবাদ পরিবেশন করায় বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেল মাইটিভির রংপুর ব্যুরো প্রধান রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের সহ-সভাপতি মাহমুদুল হাসানকে কাফনের কাপড় পাঠিয়ে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে পরীক্ষায় নকল সরবরাহে সহযোগিতার খবর প্রকাশ করায় দৈনিক আমাদের সময়ের রংপুর প্রতিনিধি খন্দকার রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে হাটু ভেংগে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন মিঠাপুকুরের পায়রাবন্দ বেগম রোকেয়া স্মৃতি গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মাহেদুল আলম।
এছাড়াও ভিজিএফ’এর চাল আত্মসাতসহ বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবেদন প্রকাশ করায় পীরগাছা উপজেলার দৈনিক সংবাদ প্রতিনিধি আব্দুল কুদ্দুস সরকার ও গণকণ্ঠের প্রতিনিধি শাহীন মীর্জা সুমন এবং আমাদের কন্ঠের রংপুর প্রতিনিধি ও রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের সদস্য হারুন-অর-রশিদ বাবুর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা ও চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। কিছুদিন আগে বদরগঞ্জ থানা কাম্পাসে দৈনিক আমার দেশের স্থানীয় প্রতিনিধি এম. এ সালাম বিশ্বাসকে ছবি তোলার অপরাধে মারধোর করেছে তিন পুলিশ সদস্য।
অন্যদিকে রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি আব্দুল আজিজ চৌধুরী সাঈদের নামে বৈষমৗ বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি মামলায় উদ্দেশ্যে প্রনোদিতভাবে আসামী করা হয়েছে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, এসব ঘটনায় রংপুরের সাংবাদিক সমাজ উদ্বিগ্ন আতংকিত। রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাব মনে করে এসব ঘটনা স্বাধীন সাংবাদিকতাকে বাঁধাগ্রস্ত করার শামিল। বর্তমান অন্তর্বর্তিকালীন সরকার যখন গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তখন এই ধরণের হুমকি, মামলা দায়ের সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে।
স্মারকলিপিতে দায়েরকৃত সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, হুমকি দাতাদেও গ্রেফতার ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন এবং অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানানো হয়। ৭ দিনের মধ্যে এসব দাবি দৃশ্যমানভাবে পূরণ করা না হলে পরবর্তীতে আন্দোলনে যাওয়ার কথা জানান।
স্মারকলিপি গ্রহন করে ডিআইজি মোঃ আমিনুল ইসলাম জানান, স্মারকলিপি পাওয়ার পরপরই পুলিশের সংশ্লিষ্ট ইউনিটে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে কাউকেই ভয় পাওয়ার প্রয়োজন নেই। সাংবাদিকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে রংপুর রেঞ্জের প্রতিটি ইউনিট সর্বোচ্চ সতর্ক থেকে কাজ করছে ও করবে তদন্ত করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।