বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরে (বেরোবি) “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন”-এর সময় শিক্ষার্থীদের ওপর সংঘটিত সশস্ত্র হামলার ঘটনায় সাবেক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, ছাত্রলীগ সভাপতি পোমেল বড়ুয়াসহ ৭১ জনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া, এজাহারে অজ্ঞাতনামা আরও ৮০ থেকে ১০০ জনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)শাহআলম সরদার।
এই মামলায় ডেসপাস শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার মোক্তারুলকে গ্রেফতার করেছে তাজহাট থানার পুলিশ।গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাজহাট থানার পুলিশের উপপরিদর্শক( মামলার আইও) (এসআই)মোসাদ্দেক হোসেন।
বুধবার (০৭মে ২০২৫) বিকাল সাড়ে ৫ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেট থেকে সহকারী রেজিস্ট্রার মোক্তারুলকে গ্রেফতার করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোঃ হারুন অর-রশীদের স্বাক্ষরে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের তাজহাট থানায় দায়ের করা লিখিত এজাহারে বলা হয়, গত ১১, ১৫ ও ১৬ জুলাই বেরোবির শিক্ষার্থীরা “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন” ব্যানারে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছিলেন। তখন সরকারদলীয় কিছু নেতার উসকানিমূলক বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর পরিকল্পিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা লাঠি, রড, কিরিচ, আগ্নেয়াস্ত্র, ইট-পাটকেল ও হাতবোমা ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের উপর আঘাত হানে। এতে মারাত্মক আহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এজাহারে পোমেল বড়ুয়াকে ১ নম্বর আসামি হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়, তার নেতৃত্বেই হামলাটি সংঘটিত হয়। ৩ নম্বর আসামি মাসুদুল খালেদ হাসানের বিরুদ্ধে একজন শিক্ষার্থীকে গলা চেপে ধরে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, হামলা চলাকালে পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখেনি।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, হামলাকারীরা কেবল নিরীহ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েই ক্ষান্ত হয়নি পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে এক ভয়াবহ আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এতে শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও জীবননিরাপত্তা মারাত্মকভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে।
ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেছে। দায়েরকৃত মামলায় দণ্ডবিধির ১৪৩/১৪৭/৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩০৭/১১৪/৩৪ ধারার পাশাপাশি ৩ক বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন সংযুক্ত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতি নিরপেক্ষ তদন্ত ও দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া শুরুর জন্য আহ্বান জানিয়েছে।
ডেসপাস শাখার সহকারী রেজিস্ট্রারকে গ্রেফতারের বিষয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) ( মামলার আইও)মোসাদ্দেকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ক্যাম্পের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।