দলীয়ভাবেই চাঁদাবাজদের প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে একটি বিশেষ দলকে রাষ্ট্রীয়ভাবেই নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের একটি টকশোতে এসব কথা বলেন বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও চিকিৎসক আব্দুন নূর তুষার।
চাঁদাবাজির সঙ্গে একটি দলের নেতৃবৃন্দেরও যোগসূত্র আছে, যারা রাষ্ট্রীয় সুবিধা নিয়ে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার চেষ্টা করছেন।
এমনটা উল্লেখ করে তুষার বলেন, ‘চাঁদা কি তারা শুধু মানুষের ঘরে ঘরে যেয়ে তুলছে? তারা তো রাষ্ট্রের উপরে চাঁদাবাজি করছে। এই যে তারা পদযাত্রা করছে তারা বিভিন্ন জায়গায় সভা সমাবেশ করছে, রাষ্ট্রের এপিসিতে উঠে বসছে। রাষ্ট্রের পুলিশ অন্য থানা থেকে এনে তাদেরকে প্রতিরক্ষা দিতে হচ্ছে। অধিকতর নিরাপত্তা।
বিদ্যুৎ এমনি সময় যেতে পারবে, তারা মিটিং করলে বিদ্যুৎ যেতে পারবে না। চিঠি দিয়ে বিদ্যুৎ ঠিক রাখা লাগবে। এটাও কি এক ধরনের চাপিয়ে দেওয়া বিষয় না? অন্য সব দলকে কি সরকার এই সুবিধা দিচ্ছে? অন্য দল যদি কোনো কিছু করে এই একই ধরনের নিরাপত্তা একই ধরনের সুবিধা কি দেবে? আসলে তারা সরকারের ভেতরেও আছে, সরকারের বাইরেও আছে। এটাও কি এক ধরনের বিশেষ সুবিধা নেওয়া না? ফলে আমি মনে করি যে এটা (চাঁদাবাজি) শুধুমাত্র আইসবার্গের উপরের অংশটা।
এটা হচ্ছে বরফের ওই ১১ ভাগ ডুবে থাকে আর এক ভাগ উপরে থাকে সেরকম একটা ব্যাপার।
চাঁদাবাজির পেছনে রাষ্ট্রীয় অপারগতা আছে উল্লেখ করে তুষার বলেন, ‘এই চাঁদাবাজি কি গতকাল প্রথম হয়েছে? এই চাঁদাবাজির অভিযোগ কি বারবার করা হচ্ছে না? মানুষের ঘরের মধ্যে ঢুকে মানুষের অন্তরবার জুতা, জামা যে ঘরের মধ্যে কেউ থাকে না সেটা লুট হয় নাই? বিভিন্ন জায়গাতে ঘরবাড়ির মধ্যে ঢুকে মানুষজনের মূল্যবান বস্তু নিয়ে যাওয়ার যে ঘটনা সেটা ঘটে নাই? সেটা যখন ঘটেছে তখন এই সরকার এই সরকারের লোকজন সেটাকে প্রেশার গ্রুপ বলেছে। নানান রকমের কথাবার্তা বলেছে।
বলেছে যে এটা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ বলেছে। এতদিন নির্যাতনের মধ্যে থাকলে মানুষ তো একটু সেলিব্রেশন করবে। তো এখন সেলিব্রেশন ৫০ লাখ টাকা গিয়ে ঠেকেছে।’
কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যরা চাঁদাবাজদের প্রশ্রয় দিচ্ছে জানিয়ে তুষার বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কে চাঁদাবাজি করে? আপনার মনে হয় তারা জানে না কিচ্ছু। তাদের নামে চাঁদাবাজি হচ্ছিল বা হচ্ছে। আমরা কি ওই ছবিটা দেখি নাই যে গাড়ির কাছ নামে একজন ৭ লক্ষ টাকা দিচ্ছেন এবং বলছেন যে এর আগে আরো টাকা দিয়েছেন। ওই ঘটনা ঘটার পরে যে-ই টাকাটা নিয়েছিল তাকে নিয়ে কোন কথা বলা হয়েছিল? কিংবা ওই ঘটনাটাকে কি তারা তদন্ত করার জন্য দাবি জানিয়েছিল? ওইখানে যে ঘটনা আছে তাকে কি রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে?’
চাঁদাবাজির অভিযোগে কয়েকজন নেতাকর্মীর গ্রেপ্তার ইস্যুতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটিবাদে সব কমিটি স্থগিত করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তুষার বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কমিটির লোক গিয়ে ধরা পড়ল চাঁদাবাজি করতে। আর সেই কেন্দ্রীয় কমিটিটাই বহাল রাখলো। মানে চোরের কমিটিটা রেখে সারা দেশের কমিটি বাতিল করে দিল। তাইলে আপনি বলেন যে এটা এটা কেমন বিচার হলো? সারা দেশে তার মানে তারা চুরি করছিল। সবাই চাঁদাবাজি করছিল।
এজন্য সবারটা বন্ধ করেছে। এখন শুধু বড়রাই থাকবে, খাবে। একজন ধরা পড়ে গিয়েছে বলে আপাতত তাকে রিমান্ডে পাঠিয়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটি কিন্তু ঠিক আছে। ধরা পড়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির লোক আর ওইটাকে ঠিক রেখে বাতিল করেছে সারাদেশের কমিটি!’