চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে এক নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি ও ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম আলমাস মাহফুজ রাফিদ। তিনি চারুকলা ইনস্টিটিউটের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং চবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি মোঃ মহসিনের অনুসারী বলে নিশ্চিত করেছেন অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ও সংগঠনটির একাধিক নেতাকর্মী।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে বিচারের দাবিতে লিখিত অভিযোগ জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী এক নারী শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগে জানান, গত ৯ জুলাই পুরাতন কলা ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে তাকে হুমকি দিয়ে যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের চেষ্টা চালান চারুকলার শিক্ষার্থী আলমাস মাহফুজ রাফিদ। আগের রাতেই রাফিদ হুমকি দিয়েছিলেন “হয় সম্পর্ক রাখতে হবে, না হয় তোমার নামে গুজব ছড়াবো।”
অভিযোগে তিনি আরও বলেন, রাফিদ জোরপূর্বক তাকে ছাদে নিয়ে গায়ে হাত দেন ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। কাকুতি-মিনতির পর ছাদ থেকে নেমে এসে ক্লাসরুমে অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। পরে পানি ঢেলে তাকে জ্ঞান ফেরানো হয়। এখনও রাফিদ তাকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই নারী শিক্ষার্থী জানান, রাফিদ তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। দুদিন সম্পর্ক ছিল, কিন্তু পরে তার অপকর্ম জানতে পেরে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। এরপর থেকেই নানা রকম চাপ প্রয়োগ করে। ঘটনার দিন ছাদে দেয়ালে চেপে ধরে অশালীন আচরণ করেন এবং স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন। এ বিষয়ে সাহায্য চাওয়ার পর যাদের কাছে গিয়েছেন, তাদেরও হুমকি দিয়েছেন রাফিদ। বলেছেন ‘আমার অনেক লোক আছে, বললেই উধাও করে দেবো।’
এছাড়াও অভিযুক্ত রাফিদ নামে ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে একাধিক যৌন হয়নারি ও নিজ বন্ধুকে ডেকে নিয়ে আক্রমণ করার চেষ্টারও অভিযোগ রয়েছে।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত রাফিদ বলেন, এই মেয়ের সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। কিন্তু সে আমার সাথে থাকা অবস্থায় আরো একজনের সাথে প্রেম করে। এইটা নিয়ে তার সাথে আমার বাকবিতণ্ডা হয়। তার এই প্রেমের কাহিনী ঢাকতে আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। এভাবে মিথ্যা নিউজ ছড়াইলে তো আমাকে মরে যাইতে হবে। এটা নিয়ে কোন তদন্ত হয় নাই। না করে আমার বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ করা হয়েছে।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর হায়দার বলেন, আমরা কয়েকদিন আগে একটি অভিযোগ পত্র পেয়েছি। এ বিষয়ে উপ-উপাচার্যের (প্রশাসন) সাথে কথা বলেছি এই অভিযোগটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিপীড়ন বিরোধী সেলে যাবে। তারা এই বিষয়টি দেখবেন। আমরা অভিযুক্ত ওই শিক্ষার্থীর বিভাগেও খোঁজখবর নেব যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।