ইসরাইলের হামলায় গত চারদিনে তেহরানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে দাড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ। এছাড়া, ইসরাইলের বন্দরনগরী হাইফাসহ মধ্যাঞ্চলের চারটি জায়গায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আটজন নিহত এবং অন্তত ৭৪ জন আহত হয়েছেন।
এনিয়ে ইরানের পাল্টা হামলায় ইসরাইলে নিহতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২০ জন। এরই মধ্যে, হামলার প্রতিশোধ নেয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির কোনো আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ইরান। এদিকে, ইরানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা চেয়েছে ইসরাইল।
টানা চতুর্থ রাতেও একে অপরের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে দফায় দফায় ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে ইসরাইল ও ইরান। সোমবার ভোরে ইসরাইলের একটি তেল পরিশোধনাগারে আঘাত হানে ইরান। এছাড়া দেশটির মধ্যাঞ্চলেও ইরানের হামলায় কয়েকজন হতাহত হন। ইরানি একটি মিসাইল মধ্য ইসরাইলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে সরাসরি আঘাত হানায় সেখানে আগুন ধরে যায়।
আইআরজিসি-এর সর্বশেষ এই হামলায় তেল আবিব, হাইফা, বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর ও নেভাটিম বিমানঘাঁটি লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। বাত ইয়াম শহরে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ৭৫টিরও বেশি ভবনের মধ্যে ২২টি ভবন ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, ইরানের কোম শহরের ৩০ কিলোমিটার উত্তরপূর্বাঞ্চলে অবস্থিত ফোর্দো পরমাণু কেন্দ্রে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এর আগে, ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহত হন ইরানের অভিজাত বাহিনী রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের আইআরজিসি গোয়েন্দা শাখার প্রধানসহ দুই ইরানি জেনারেল।
এছাড়া ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটিতে হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলি বিমান বাহিনী। এক বিবৃতিতে আইডিএফ বলেছে, তারা ইরানের কেন্দ্রীয় অঞ্চলের ভূমি থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটিতে আক্রমণ চালাচ্ছে।
এরইমধ্যে, হামলা না থামালে ইসরাইলকে আরও কঠোর জবাব দেয়া হবে বলে সতর্ক করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। ইরাকের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে তিনি একথা বলেন। ইসরাইল হামলা অব্যাহত রাখলে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলোর নিরাপত্তাও ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট।
এদিকে ইসরাইলের সব বিমানবন্দর ও আকাশসীমা পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া ইরানের প্রতিশোধের আশঙ্কায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দূতাবাস ও কূটনৈতিক মিশন সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে দেশটি।
ইরানের প্রতিশোধমূলক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা ঠেকাতে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে সহায়তা চেয়েছে ইসরাইল। যুক্তরাজ্য ইতোমধ্যেই ইসরাইলের অনুরোধের জবাবে সহায়তা দিচ্ছে বলেও জানা গেছে। এরিমধ্যে বিভিন্ন ঘাঁটি থেকে মার্কিন সেনাবহর উপসাগরের দিকে যাত্রা শুরু করেছে।
ইসরাইলের চলমান হামলার মধ্যে কোনো ধরনের যুদ্ধবিরতি আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ইরান। কেবলমাত্র ইসরাইলি হামলার জবাব দেয়া শেষ হলেই গঠনমূলক আলোচনায় বসবে ইরান, এমনটাই জানানো হয়েছে দেশটির পক্ষ থেকে।