শিরোনাম
গঙ্গাচড়ায় হিন্দু পল্লি পরিদর্শনে জামায়াতে ইসলামী; ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা সামগ্রী বিতরণ ডিবি হারুনকে ‘জ্বীন’ বলে ডাকতেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা বেরোবির ড. ওয়াজেদ ইন্সটিটিউটের নতুন নাম ‘ইন্সটিটিউট অব রিসার্চ এক্সিলেন্স’ বিমানবন্দর থেকে বের হতেই ডিবি পরিচয়ে লন্ডন প্রবাসীর মালামাল লুট রিয়াদের বাসা থেকে আড়াই কোটির চেক, ২০ লাখ টাকার এফডিআর উদ্ধার তিস্তায় পানি বাড়ছে, ডালিয়া বিপৎসীমায় রংপুরের গঙ্গাচড়ায় হিন্দুপাড়ায় হামলার ঘটনায় ১২’শ জনের বিরুদ্ধে মামলা কিশোরগঞ্জে ভিক্ষুক পেল মালামালসহ মনোহারি দোকান সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনসিপি নেতা তুষারের সহযোগীদের বিরুদ্ধে, ভিডিও ভাইরাল
বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ০৮:৫৬ পূর্বাহ্ন

চট্টগ্রামে বিএনপির দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, গাড়ি ভাঙচুর-আগুন

ডেস্ক রিপোর্ট / ১১ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫

চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় বিএনপির দুই গ্রুপে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকারসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। ভাঙচুরের পাশাপাশি কয়েকটি যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সেখানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে রাউজান পৌরসভার ছত্তারহাট এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার এবং দলটির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী উভয়ে রাউজান উপজেলার বাসিন্দা। রাউজানে বিএনপির নেতাকর্মীরা দুই নেতার আলাদা বলয়ে বিভক্ত। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে রাউজানে উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় রক্তক্ষয়ী সংঘাত হয়েছে। এতে কমপক্ষে ১২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে গণমাধ্যমের ভাষ্য।

জানা গেছে, আজ (মঙ্গলবার) বিকেলে রাউজান পৌরসভা সদরে গোলাম আকবর খোন্দকারের চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও রাউজান উপজেলার সাবেক সভাপতি প্রয়াত মহিউদ্দিন আহমেদের কবর জেয়ারতের কর্মসূচি ছিল। অন্যদিকে একই সময়ে গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীরা মোটরসাইকেল শোভাযাত্রার কর্মসূচি ঘোষণা করে।

গোলাম আকবর খোন্দকারকে নিয়ে নেতাকর্মীরা গাড়িবহর সহকারে রাউজান পৌরসভা এলাকার সুলতানপুরে প্রয়াত মহিউদ্দিন আহমেদের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। অন্যদিকে পৌরসভার মুন্সীঘাটা এলাকা থেকে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের করেন গিয়াস কাদেরের অনুসারীরা। এসময় পৌরসভার ছত্তারহাট এলাকায় উভয় গ্রুপ মুখোমুখি হয়।

স্থানীয় গণমাধ্যমের কাছে আসা ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, একটি কালো রঙের পাজেরো গাড়িতে গোলাম আকবর খোন্দকারসহ কয়েকজন ছিলেন। সামনে-পেছনে আরও কয়েকটি গাড়ি ও মোটরসাইকেলে তার অনুসারী নেতাকর্মীরা ছিলেন। ছত্তারহাট এলাকায় তাদের গাড়িবহর পৌঁছার পর দেখা যায়, আনুমানিক ৫০-৬০ গজ দূরে লাঠিসোঠা নিয়ে কয়েক’শ লোক সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। এতে গোলাম আকবরের গাড়িবহর থেমে যায়। তখন তার গাড়ি ও নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। তখন পাল্টা ইট-পাটকেল তাদের দিকেও ছোঁড়া শুরু হয়।

সংঘর্ষের মধ্যেই গাড়ি থেকে গোলাম আকবর খোন্দকারের চালক নামার পর অপরদিক থেকে ছোঁড়া ইটের আঘাতে তিনি রক্তাক্ত হন। এসময় তিনি গাড়ি সরিয়ে নেওয়ার জন্য বারবার ‘সেলিম’ নামে একজনের কাছ থেকে চাবি খুঁজছিলেন। কিন্তু চাবি না পাওয়ায় গাড়ি সরিয়ে নিতে সক্ষম হননি। এর মধ্যেই বিপরীত দিক থেকে লোকজন ইট-পাটকেল ছুঁড়তে ছুঁড়তে একেবারে গাড়ির সামনে এসে যান। ইটের আঘাতে গাড়ির কাচ ভেঙে ছিটকে পড়তে দেখা যায়।

তখন গোলাম আকবর খোন্দকার গাড়ি থেকে নেমে যান এবং নেতাকর্মীরা তাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেন। তবে গাড়িতে থাকা অবস্থায় ইট এবং ভাঙা কাচের আঘাতে তিনি রক্তাক্ত হন। গাড়ি থেকে নামার পর তার শরীর থেকে রক্ত ঝরতে দেখা যায়। এরপর সড়কের ওপর কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুরের পাশাপাশি আগুন ধরিয়ে দেয় হামলাকারীরা।

তখন গোলাম আকবর খোন্দকার গাড়ি থেকে নেমে যান এবং নেতাকর্মীরা তাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেন। তবে গাড়িতে থাকা অবস্থায় ইট এবং ভাঙা কাচের আঘাতে তিনি রক্তাক্ত হন। গাড়ি থেকে নামার পর তার শরীর থেকে রক্ত ঝরতে দেখা যায়। এরপর সড়কের ওপর কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুরের পাশাপাশি আগুন ধরিয়ে দেয় হামলাকারীরা।

পুলিশ-র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল পরিমাণ সদস্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার পর সংঘাতে জড়িতরা চলে যান বলে জানা গেছে।

গোলাম আকবর খোন্দকারের সঙ্গে একই গাড়িতে থাকা তার ব্যক্তিগত সহকারী অর্জুন কুমার বলেন, ‘আমরা সুলতানপুরে যাচ্ছিলাম। ছত্তারহাট এলাকায় আমাদের ওপর আক্রমণ হয়। গোলাম আকবর খোন্দকার সাহেবের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। আমাদের নেতাকর্মীদের আরও কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য করে গুলিও ছোঁড়া হয়েছে। কমপক্ষে ২০-৩০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশ এসে হামলাকারীদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর আমরা অন্য গাড়িতে চট্টগ্রাম শহরের দিকে যাচ্ছি।’

আহত গোলাম আকবর খোন্দকারকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার নেওয়া হচ্ছে বলে জানান অর্জুন কুমার নাথ।

জানতে চাইলে গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য হাজী জসিম উদ্দিন বলেন, ‘গোলাম আকবর খোন্দকার সাহেবের কবর জেয়ারতের একটি কর্মসূচি ছিল বলে শুনেছি। জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূতি উপলক্ষ্যে আমরা ৯ আগস্ট রাউজানে বিশাল সমাবেশ করবো। সমাবেশের প্রচারণার জন্য গিয়াস কাদের সাহেবের গ্রুপের পক্ষ থেকে একটি মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের করা হয়। ছত্তারহাট এলাকায় দুই গ্রুপ মুখোমুখি হলে সংঘর্ষ শুরু হয়। উভয় গ্রুপের লোকজন আহত হয়েছেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম সানতু বলেন, ‘রাউজানে বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ হয়েছে। আমাদের ওসি উভয়পক্ষকে নিবৃত্ত করার যথেষ্ঠ চেষ্টা করেছেন। তিনি একেবারে সংঘর্ষের মাঝখানে দাঁড়িয়ে বড় রিস্ক নিয়ে উভয়পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করেছেন। এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে। একজন সিনিয়র লিডারের গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে। উনি আহত হয়েছেন বলে শুনেছি। দুটি মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখনও এসব বিষয়ে আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ