ঘুষ ছাড়া সরকারি বরাদ্দ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন (টিআর-কাবিখা) বরাদ্দের আবেদন গ্রহন করেনা নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) লতিফুর রহমানের অফিসের অফিস সহায়ক (আউটসোর্সিং) লিটন ইসলাম। এনিয়ে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে মৌখিকভাবে অভিযোগ করলেও প্রতিকার পায়নি ভুক্তভোগীরা।
সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যলয় থেকে সরকারি বরাদ্দ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন টিআর কাবিখাসহ বিভিন্ন প্রকল্প বরাদ্দ দেওয়া হয়। এতে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন দুস্থ ও এতিম শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাদরাসায় এ বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে একাধিক ভুক্তভোগীর অভিযোগ এসব বরাদ্দ নিতে হলে অফিসের পিয়ন লিটন ইসলামকে মোটা অংকের ঘুষ না দিলে বরাদ্দের আবেদন গ্রহন করেন না তিনি। এছাড়া তাকে অফিসের বিভিন্ন বরাদ্দসহ কাজে মোটা অংকের ঘুস দিয়ে হয়।
২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে লিটন ইসলামকে প্রতিটি বরাদ্দে মোটা অংকের ঘুস না দিলে বরাদ্দ তুলতে হয়রানির শিকার হয় একাধিক সুবিধাভোগী। ঘুষ না দিলে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে কম দামে বরাদ্দ কিনে অধিক টাকায় ডিলারের কাছে বিক্রি করেন তিনি। এছাড়া বিভিন্নভাবে ভুয়া প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তারসহ এতিমের বরাদ্দ আত্মসাৎ করেন। দীর্ঘদিন সেখানে কর্মরত থাকায় স্থানীয় চালের ডিলারদের সঙ্গে সিন্ডিকেট করে দুস্থদের বঞ্চিত করে বরাদ্দ বিক্রি করে আসছেন তিনি।
এ বিষয়ে বড়ভিটা জান্নাতুল বানাত মহিলা মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা শোয়াইব ইসলাম বলেন, আমি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যলয়ে আমার মাদরাসার জন্য চাল বরাদ্দ নিতে গেছিলাম। সেখানে গিয়ে আমাকে অফিসের পিয়ন লিটন ইসলাম বলেন একই মাদরাসায় বারবার দেওয়া হবেনা। পরে সে আমাকে বলে আপনি একটা অন্য ভূয়া মাদরাসা দেখিয়ে আবেদন করেন আর কিছু খরচ হবে সেটা দিলে আমি কাজ করে দিব। পরে সে আমার কাছে ৭০ হাজার টাকা ঘুষ নেয়। সেটা নিয়ে বরাদ্দ হয় তিন মেট্রিক টন চাল। পরে চাল বরাদ্দ হওয়ার পরে আমি চাল তুলতে যাই সেখানে গিয়ে সে আমাকে চাল দেয়না লিটন। কয়েকদিন ঘুরার পর সে আমাকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘুষের এই ৭০ টাকা ফেরত দেয়। পরে আমাকে বিভিন্ন ভয় দেখালে আমি ভয়ে আর তার কাছে যাইনি। সে এতিমের চাল খেয়েছে আমি আল্লাহর কাছে বিচার দিয়েছি।
পুটিমারি ইউনিয়ন পরিষদের নারী ইউপি সদস্য শ্যামলী রানী রায় বলেন, আমাকে একটা প্রকল্পে সভাপতি করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিলো। আমি সেখানে ভালোভাবে কাজ করতে পারিনি। বরাদ্দ দেওয়ার কিছু পর লিটন বারবার ঘুষ নিতে চাপ দেয়। পরে আমার স্বামীসহ লিটন অল্প কাজ করে টাকা তুলেছে। সেখানে কি কাজ হয়েছে সেটাও জানিনা কত টাকা তোলা হয়েছে সেটাও জানিনা।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যলয়ের পিয়ন লিটন ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, আমি এসব বিষয়ে কলে কথা বলতে চাইনা ভাই, আপনি কোথায় আছেন দয়া করে আমার সঙ্গে দেখা করেন ভাই। আপনি অফিসে আসেন ভাই আমরা এ বিষয়ে সামনাসামনি কথা বলি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা(পিআইও) লতিফুর রহমানের সঙ্গে পিওনের ঘুষ নেওয়ার বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।