গালফ অঞ্চলের রাজনীতিবিষয়ক এক বিশেষজ্ঞের মতে, গাজায় যুদ্ধ না থামলে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি আসবে না। তাই বলে প্রাণহানি থেমে নেই। অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে ইসরায়েলি হামলায় মঙ্গলবার (২৪ জুন) ভোর থেকে অন্তত ৭০ জন মারা গেছেন। ইসরায়েলি বাহিনী নির্বিচারে বোমা হামলা চালিয়েছে গাজায়। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, মোট নিহতের সংখ্যা এরই মধ্যে ৫৬ হাজার ছাড়িয়েছে।
মঙ্গলবার যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে অন্তত ৫১ জন সহায়তাপ্রত্যাশী ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) বিতরণকেন্দ্র থেকে সহায়তা সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন তারা। জাতিসংঘ এরই মধ্যে বলেছে, জিএইচএফের সহায়তাকে গাজাবাসীর বিরুদ্ধে হাতিয়ারে পরিণত করা হয়েছে।
শুধু অবরুদ্ধ উপত্যকাটির দক্ষিণের রাফা শহরেই মঙ্গলবার ২৭ জন সহায়তা প্রত্যাশীকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
গাজায় হামলা ও মৃত্যুর ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞ ও পর্যবেক্ষকরা বলছেন, গাজা মানব কসাইখানায় পরিণত হয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনী খাদ্য সহায়তাও সেখানে ঢুকতে দিচ্ছে না। শুধু জিএইচএফ বাইরে থেকে সহায়তা প্রবেশ করাতে পারছে। তবে যতটুকু সহায়তা প্রবেশ করছে তা চাহিদার তুলনায় একেবারেই সামান্য। এতে করে গাজায় দেখা দিয়েছে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি।
এদিকে, শুরু থেকেই সহায়তাপ্রত্যাশী মানুষকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। এ পর্যন্ত গাজায় চারশরও বেশি সহায়তাপ্রত্যাশী ব্যক্তি নিহত হয়েছেন ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন এক হাজারেরও বেশি। জিএইচএফ গাজায় সহায়তা দেওয়া গত ২৭ মে থেকে শুরু করেছে। এ সময়ের মধ্যেই ঘটেছে এসব প্রাণহানির ঘটনা।
কাতার ইউনিভার্সিটির গালফ রাজনীতিবিষয়ক সহযোগী অধ্যাপক লুসিয়াঙ্কো জাকারার মতে, গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের অবসান ব্যতীত মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি আসা সম্ভব না। তবে ইসরায়েল বা যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জাকারা বলেন, মানুষ সেখানে আগের তুলনায় আরও বেশি মারা যাচ্ছেন। তবে দেখে মনে হচ্ছে, অনেক দেশের কাছে এটি আর গুরুত্বপূর্ণ নয়, বিশেষ করে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। সূত্র: আল-জাজিরা