ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে গাইবান্ধার পথে। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে যাওয়া এই যাত্রা রূপ নিয়েছে তীব্র ভোগান্তিতে। বিশেষ করে ঢাকা থেকে গাইবান্ধা যেতে কোথাও কোথাও সময় লাগছে ১৪ থেকে ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত।
সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে পলাশবাড়ী পর্যন্ত মাত্র ১৭ কিলোমিটার মহাসড়কে। এই অল্প পথ পাড়ি দিতে সময় লাগছে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা।
যাত্রীরা বলছেন, অতিরিক্ত যানবাহন, মহাসড়কের পাশে বসা পশুর হাট, বৃষ্টিতে স্যাঁতসেঁতে রাস্তা এবং নির্মাণাধীন সড়কই এই দুর্ভোগের মূল কারণ।
এছাড়া ঢাকায়ও শুরু থেকেই জটিলতা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন যাত্রীরা। কেউ কেউ জানান, রাজধানী ছাড়তেই তাদের সময় লেগেছে কয়েক ঘণ্টা।
ঢাকা থেকে গাইবান্ধা ফেরা আনারুল ইসলাম বলেন, গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় গাবতলী থেকে রওনা দিয়েছিলাম। আজ বেলা সাড়ে ১১টায় গাইবান্ধায় নেমেছি। সময় লেগেছে প্রায় ১৮ ঘণ্টা। এখান থেকে আমার বাড়ি সুন্দরগঞ্জ যেতে আরও দুই ঘণ্টার বেশি লাগবে।
একই রকম অভিজ্ঞতার কথা জানান আজাহার নামে আরেক যাত্রী। তিনি বলেন, মহাখালী থেকে গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাস ছাড়ে। সকাল ৭টার দিকে গোবিন্দগঞ্জ পৌঁছাই। এরপর গোবিন্দগঞ্জ থেকে পলাশবাড়ী পর্যন্ত মাত্র ১৭ কিলোমিটার পথে ৫ ঘণ্টা আটকে ছিলাম। স্ত্রী আর ছোট বাচ্চাকে নিয়ে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।
ভাড়া দ্বিগুণ নেওয়ার অভিযোগও এসেছে। ঢাকায় রাত ৯টায় বাসে উঠে গাইবান্ধা পৌঁছানো সুমনচন্দ্র বর্মণ বলেন, ১৫ ঘণ্টা লেগেছে। ভাড়া নিয়েছে ১ হাজার ১০০ টাকা, যা স্বাভাবিক সময়ের দ্বিগুণ।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আশরাফুল আলম বাদশা বলেন, ঢাকা থেকে গাইবান্ধায় ফিরতে এখন ১৪ থেকে ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগছে। বিশেষ করে গোবিন্দগঞ্জ-পলাশবাড়ি অংশে দুর্ভোগ বেশি। অতিরিক্ত যাত্রী ও পণ্য পরিবহন, অস্থায়ী পশুর হাট, বৃষ্টির কারণে ভেজা রাস্তা এবং নির্মাণাধীন সড়কে জমে থাকা পানিই এই যানজটের প্রধান কারণ।
গাইবান্ধা জেলা পুলিশের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) জসিম উদ্দিন বলেন, ঈদযাত্রায় সবচেয়ে বড় সমস্যা সৃষ্টি করছে অতিরিক্ত ব্যক্তিগত গাড়ি। মহাসড়কে তিন লেনের যানবাহন দুই লেনে চলায় জট তৈরি হচ্ছে। যাত্রীদের নির্বিঘ্ন যাত্রা নিশ্চিত করতে জেলা পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো যৌথভাবে কাজ করছে।