গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সদরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলীয় দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। সম্ভাব্য সংঘর্ষ ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত পৌর এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার(২ সেপ্টেম্বর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজ কুমার। তিনি বলেন, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং জানমালের ক্ষতির আশঙ্কায় পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।”
এ বিষয়ে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ জানান, রাত থেকেই পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে। যেকোনও ধরনের অপতৎপরতা রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর নজরদারিতে রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ঘিরে বুধবার পৌর এলাকার দলীয় কার্যালয়ে উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে অনুষ্ঠান আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে দলটির আরেকটি অংশও একই স্থানে আলাদা আয়োজনের ঘোষণা দেয়। তারা মেয়াদোত্তীর্ণ আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের কার্যালয়ে প্রবেশে বাধা দেওয়ার হুমকি দিলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
এর আগে গত ২৫ আগস্ট সুন্দরগঞ্জের ১৫টি ইউনিয়নে নতুন সদস্য সংগ্রহ ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয় জেলা বিএনপি। কিন্তু কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। তৃণমূল নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে অন্য দলের চিহ্নিত কর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন অনেকে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ বিএনপি নেতাকর্মীরা গত ২৭ ও ৩১ আগস্ট বিক্ষোভ, ঝাড়ু মিছিল ও মোটরসাইকেল শোডাউন করেন। তারা জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. মইনুল হাসান সাদিকের অপসারণ দাবি করেন। অভিযোগ ছিল, মাত্র দুই ঘণ্টায় প্রহসনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করে ত্যাগী নেতাদের বাদ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, সাদিকের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের নেতৃত্বে পাল্টা বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে টানা কয়েকদিন ধরেই সুন্দরগঞ্জে দলীয় অভ্যন্তরীণ বিরোধ বাড়তে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসন এখন কড়া অবস্থানে রয়েছে।