বেজা জানিয়েছে, ২০১৭ সালের ৭ থেকে ১০ এপ্রিল ভারতের বিশেষ আমন্ত্রণে দিল্লি সফর করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময় দুই দেশের শীর্ষ বৈঠকে মীরসরাইয়ে ভারতের আদানি গ্রুপকে ১০৫৫ একর জমি দেওয়ার বিষয়টি আলোচনা হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ১৫৫ একর কমিয়ে ৯০০ একর জমি দিতে সম্মতি জানায়।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বৈঠকে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের দ্রুত কার্যক্রম শুরুর ওপর গুরুত্ব দেন। ২০২৯ সালের অক্টোবর মাসে আদানি বন্দর ও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়। ২০২২ সালে আরও একটি চুক্তিতে জয়েন্ট ভেঞ্চার গড়ে তোলার শর্তসহ ভারতীয় এলওসির আওতায় ৬৫ শতাংশ যন্ত্রাংশ ভারত থেকে ক্রয় করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বেজার একজন কর্মকর্তা জানান, এই ৯০০ একর জমির কোন মূল্য নির্ধারণ করা হয়নি। এছাড়া, স্থাপনা নির্মাণ ও উন্নয়নের সব কাজ ভারতীয় প্রতিষ্ঠান করবে, যেখানে বাংলাদেশের কোনো সংস্থা বা নাগরিকের প্রবেশাধিকার থাকবে না। প্রকল্পের যাবতীয় নিয়ন্ত্রণ ভারতই করবে এবং বাংলাদেশ শুধু পর্যবেক্ষক ভূমিকা রাখতে পারবে।
চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ের এই এলাকায় বঙ্গোপসাগর রয়েছে একপাশে, অন্যপাশে ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ে। তাছাড়া, ভারতের ত্রিপুরা থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে। স্থানীয় ঠিকাদার ও গবেষকরা জানাচ্ছেন, এলাকার মানুষ প্রাথমিক থেকেই প্রকল্পটি নিয়ে উদ্বিগ্ন। স্থানীয় কৃষকরা জমি হারানোর ফলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সামরিক বিশ্লেষক মেজর (অব.) মোহাম্মদ মোস্তফা বলেন, “শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য শেখ হাসিনা ভারতের জন্য এত বড় জমি বিনামূল্যে দিয়েছেন। বাংলাদেশ এখানে কোনো স্বার্থ রাখে না। এটি ভারতের একতরফা সুবিধার প্রকল্প।”
গবেষণা প্রতিষ্ঠান নয়া দালানের চেয়ারম্যান মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, “প্রকল্পের মাধ্যমে মীরসরাইয়ে একটি ছোট ভারত গড়ে উঠবে, যা দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি।”
প্রকল্পটি বর্তমানে স্থগিত ও পুনঃমূল্যায়নের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর স্থানীয় জনগণকে এ এলাকায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে এবং ৭০০ একর অতিরিক্ত জমি বর্তমানে মুক্ত।