শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ০৯:৪৮ অপরাহ্ন

ক্ষমতায় গেলে আফগানিস্তানের মতো বাংলাদেশ বানাতে চাই: ফয়জুল করীম

ডেস্ক রিপোর্ট / ২ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ৪ জুলাই, ২০২৫

জাতীয় নির্বাচন জিতে সরকার গঠন করতে পারলে দেশে শরিয়া আইন চালু করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন টকশোতে এসে এসব কথা বলেছেন ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। তিনি বলেছেন, আমাদের শরিয়া, আমাদের দর্শন- আমাদের কোরআন ও হাদিসে দেওয়া আছে।

এখনকার কোনো রাষ্ট্রব্যবস্থার মধ্যে এমন আছে কি না?- খালেদ মুহিউদ্দীনের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখন আফগানের মধ্যে আপনি দেখতে পারেন। সেখানে শরিয়া অনেক বেশি পালন করা হচ্ছে।’ আবার পাল্টা প্রশ্ন করেন খালেদ মুহিউদ্দীন ‘আপনি আফগানিস্তানের মতো বাংলাদেশ বানাতে চান?’ জবাবে ফয়জুল করীম বলেন, ‘হ্যাঁ, বানাতে চাই।’

ইরানের শাসনব্যবস্থার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ফয়জুল করীম বলেন, এক্ষেত্রে ইরানের যে ভালো দর্শনগুলো আছে, যেটা শরিয়ার সাথে সাংঘর্ষিক না- তা গ্রহণ করবো। একইভাবে আমেরিকার যে ভালো দর্শন, ইংল্যান্ডের ভালো দর্শন, রাশিয়ার ভালো দর্শন যেগুলো ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক না- সেগুলোও জনগণের স্বার্থে গ্রহণ করা হবে।

তিনি বলেন, ‘ক্ষমতায় গেলে আমরা যে শরিয়া আইন চালু করবো সেখানে কিন্তু হিন্দুরাও অধিকার পাবে। সংখ্যালঘুদের অধিকারও বাস্তবায়ন করা হবে।’

মঙ্গলবার (১ জুলাই) টকশোটিতে অতিথি হিসেবে ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের অন্যতম এই নেতা। যা নিউইয়র্ক সময় বেলা ১১টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা) সরাসরি সম্প্রচারিত হয় ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন ইউটিউব চ্যানেলে। দেশের সমসাময়িক রাজনীতির নানা প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাব দেন অনুষ্ঠানের অতিথি ফয়জুল করীম।

শনিবার ২৮ জুন রাজধানী ঢাকায় ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একাধিক নেতা গিয়েছিলেন। এর মাধ্যমে আগামী নির্বাচনে ইসলামভিত্তিক দল দুটির এক ধরনের সমঝোতা তৈরি হচ্ছে, বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কিন্তু দল দুটির মধ্যে ধর্মীয় বিষয় নিয়ে মত-পার্থক্য রয়েছে। পরস্পরকে নিয়ে কটূক্তিরও অনেক ঘটনা রয়েছে।

সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের বছর পাঁচেক আগের এমন বক্তব্য এখন আবার সামনে আসছে সামাজিক মাধ্যমে। যেখানে তিনি বলছেন, ‘ইসলাম ধ্বংস করতে জামায়াতই যথেষ্ট।’

নির্বাচনী সমঝোতার জন্য এসব বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিবেন কি না- এমন প্রশ্নে ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির বলেন, ‘কোনো একটি বিষয়ের ওপর ঐকমত্য হলে একই মঞ্চে আসা যায়। তার মানে কেউ কারও আদর্শ বিসর্জন দেয়নি। আমি জামায়াত নিয়ে আমার পুরনো বক্তব্য থেকে একচুল সরিনি। তেমনি জামায়াত নেতারাও আমাদের বিরুদ্ধে অতীতে যেসব বক্তব্য দিয়েছে সেগুলো থেকে তারা পিছু হটেনি।’

মহাসমাবেশে জামায়াত ছাড়াও এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদ-সহ আরো কিছু দলের নেতারা ছিলেন। কিন্তু বিএনপির কেউ ছিল না কেন? এ প্রসঙ্গে ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, ‘চলমান রাষ্ট্র সংস্কারের ক্ষেত্রে যেসব দল পিআর (আনুপাতিক ভোটদান) পদ্ধতির বিষয়ে একমত তাদের দাওয়াত করা হয়েছিল। বিএনপি এতে রাজি নয় বলে তাদের দাওয়াত করা হয়নি। পিআর সিস্টেমে তারা রাজি হলে সামনে তাদেরও দাওয়াত করা হবে।

সাম্প্রতিক একাধিক বক্তব্যে বিএনপির কঠোর সমালোচনা করেছেন সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিএনপির প্রতি আমি ব্যক্তিগতভাবে ক্ষিপ্ত হইনি। মূলত তাদের চাঁদাবাজি, দলীয় কোন্দল, মারামারি, কাটাকাটি দেখে জনগণ ক্ষিপ্ত হয়েছে। আমি জনগণের মুখপাত্র হিসেবে বিএনপির এসব কাজের সমালোচনা করছি।’

 

অন্তর্বর্তী সরকারের সময় দেশের বিভিন্ন এলাকায় কথিত তৌহিদি জনতা শতাধিক মাজার ভেঙেছে। এই প্রবণতা ঠিক নয় বলে মনে করেন ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির। তিনি বলছেন, মাজার খারাপ কিছু নয়। কেউ যদি সেখানে সেজদা দেয়, তাকে বুঝিয়ে তা থেকে বিরত রাখতে হবে। মাজার ভাঙার কাজ থেকে সবাইকে ফিরে আসার আহ্বান করেন তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ