কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কচাকাটা ইউনিয়নের ধনিরামপুর সীমান্ত দিয়ে দালালের মাধ্যমে দেশের অভন্তরে ৫জন মানুষ প্রবেশ করার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। স্থানীয়দের অভিযোগ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে প্রবেশ করা পাঁচজনকে নৌকা যোগে নিরাপদে পৌছে দিয়েছে দালাল চক্রটি। জনমনে প্রশ্ন উঠেছে প্রবেশকারী ৫জন কোন দেশের নাগরীক। এ প্রবেশের ঘটনাটি ঘটেছে ১২ জুলাই শনিবার সকালে।
স্থানীয়রা জানান, ধনিরামপুর সীমান্ত এলাকাটি দূর্গম ও নদী বিছিন্ন। এই সীমান্তে কাটাতারের বেড়া নেই। এই সুযোগে একটি দালাল চক্র মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ভারতে থাকা বাংলাদেশীদের সীমান্ত পার করে নিরাপদে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠান। শনিবার ভোরে ৫জন মানুষকে ভারতের আসাম রাজ্যের তিস্তা ও বাংলাদেশের ধনিরামপুর সীমান্ত দিয়ে পার করে আনে দালাল চক্রটি। তাদেরকে প্রথমে একটি পাট ক্ষেতে পরে স্থানীয় একটি বাড়িতে রাখা হয়। এ খবর পেয়ে স্থানীয়রা ওই পাঁচজনকে আটক করলে বিজিবি এসে তাদেরকে উদ্ধার করে সবুজ নামের একজনের নৌকায় তুলে দেন। পরে নৌকাটি তরিরহাট ঘাটে আসলে ইজারাদার তাদের নৌকা আটক করে জিঙ্গাসাবাদ করে। এসময় বিজিবি এসে তাদের নৌকা ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।
স্থানীয় রফিকুল ইসলাম জানান, ধনিরামপুর সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে পাঁজন লোক নিয়ে আসে সবুজ, মিজানুর ও ফজর আলী। প্রথমে তারা তাদেরকে পাট ক্ষেতে রাখে। তাদের কাছ থেকে টাকা পয়সা নিয়েছে বলে জানতে পেরেছি। মানুষজন জানা জানি হলে তাদেরকে দ্রুত নৌকায় তুলে দেয়। এসময় বিজিবি উপস্থিত ছিলেন। বিজিবি লোকজনকে কাছে ঘিরতে দেয়নি। তাদের মোবাইল ফোনে ভারতীয় আইডি কার্ডের ছবি দেখেছি আমি। বিজিবি তাদের নৌকা যোগে যেতে সহযোগিতা করেছেন। তবে ভাটিতে নৌকাটি আটক করেছে বলে শুনেছি।
ভাটিতে তরিহাট ঘাটের ইজারাদার সহিদুল ইসলাম বলেন, সবুজের নৌকায় ভারত থেকে আসা পাঁচজন লোক যাচ্ছে শুনে আমি ও গ্রামপুলিশ নৌকাটি আটকাই। এসময় তাদের জিঙ্গাসাবাদ করলে তারা জানান, তারা ঢাকায় যাবেন। তারা কোন দেশের নাগরীক জানতে চাইলে তারা কোন কথা বলেন নাই। আইডি কার্ড আছে কিনা জিঙ্গাসা করলে তারা জানান তাদের কাছে আধার কার্ড আছে। এসময় বিজিবি এসে আমাদের সাথে তর্কে জড়ায়। পরে নৌকিা নিয়ে তারা নুনখাওয়ার দিকে যায়।
তিনি অভিযোগ করেন সবুজ, মিজানুর ও ফজর আলী আড়াই লাখ টাকা নিয়ে এই কাজ করেছেন।
অভিযুক্ত মিজানুর রহমান জানান, ভারত থেকে আসা পাঁচ নাগরীকের সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। টাকা পয়সা নেয়ার প্রশ্নই আসে না। ওই পাঁচ জনের সাথে তার রাস্তায় দেখা হয়েছে। তারা পথ জানতে চেয়েছিলো আমি তা দেখিয়ে দিয়েছে।
নৌকা দিয়ে বহন করা সবুজ মিয়া জানান, আমার নৌকা তারা ৫শত টাকা ভাড়া করে ছিলো। আমি তাদের মহসিনের চরে নামিয়ে দিয়ে এসেছি। তার ঢাকার লোক বলে জানতে পেরেছি। আমার নৌকার পিছনে বিজিবির নৌকা ছিলো কিনা আমি তা লক্ষ করিনি।
আরেক অভিযুক্ত ফজর আলীর মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে তার বড়ভাই আব্দুল মালেক জানান, ধনিরামপুর সীমান্ত দিয়ে বিএসএফ পাঁচজনকে পাঠিয়েছে তাদের বিজিবি নিয়ে গেছে। আমার ভাই এসবের কিছুই জানেনা।
তবে এসব ঘটনার সবকিছুই অস্বিকার করেছে স্থানীয় মাদারগঞ্জ বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার কিশোর শনিবার বিকেলে বলেন, আমাকে এ ধরনের ঘটনা কেউ বলেনি। টহল দল বাইরে রয়েছে। এমন ঘটনা থাকলে জানতাম।