শিরোনাম
কিশোরগঞ্জে জুলাই পুনর্জাগরণে শপথ পাঠ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত  সৈয়দপুরে রিকশাচালকদের মাঝে ক্যাপছাতা বিতরণ করেছে ‘আমাদের প্রিয় সৈয়দপুর’ নামে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য হলেন নিষিদ্ধ আ.লীগের ৩ নেতা শিক্ষার্থীদের দ্বারা এইচএসসির উত্তরপত্র মূল্যায়ন, ৮ পরীক্ষককে আজীবন অব্যাহতি সমন্বয়কদের’ জ্বালায় কাজ করতে পারছে না পুলিশ : মোস্তফা ফিরোজ বিচার ব্যবস্থা নিয়ে প্রতিবাদ করা জুলাই যোদ্ধা রিদমকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়েছে সমন্বয়করা! খাগড়াছড়িতে দুপক্ষের গোলাগুলিতে নিহত ৪ নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে ১৭৫ স্কুলে কাজ হয়নি বরাদ্দের টাকা শিক্ষা কর্মকর্তার ব্যাংক হিসেবে ডোমারে ট্রেন থেকে ছোড়া ঢিলে যুবক গুরুতর আহত কালীগঞ্জে কৃতি শিক্ষার্থীদের বিএনপি’র সংবর্ধনা
শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫, ০৫:১৬ অপরাহ্ন

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক শ্বশুরবাড়িতে—জরুরি বিভাগেই রোগীর মৃত্যু

স্থানীয় রিপোর্ট / ২৫ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২৫ জুলাই, ২০২৫

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ছিলেন ডা. কালিপদ সরকার। কিন্তু দায়িত্বে না থেকে তিনি ছিলেন শ্বশুরবাড়িতে। আর তার জায়গায় মাত্র ৫০০ টাকার ভাড়ায় বসিয়ে রাখা হয়েছিল একজন ডিএমএফ পাস ছাত্রকে। এদিকে শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে জামাল বাদশাহ (৫৫) নামের এক রোগী বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে আসেন। স্বজনরা জরুরি বিভাগের সামনে বারান্দায় নিয়ে এলেও দীর্ঘ এক ঘণ্টা সেখানেই পড়ে থাকেন তিনি। ভাড়াটে ডিএমএফ রুবেল তার কাছে যাননি, বরং স্বজনরা ডাকতে গেলে দুর্ব্যবহার করেন। পরে চাপের মুখে রোগীর কাছে গেলেও ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে—মারা যান জামাল বাদশাহ।

ঘটনার পর ক্ষুব্ধ স্বজনরা জরুরি বিভাগে হট্টগোল শুরু করলে বেরিয়ে আসে চিকিৎসক ডা. কালিপদের অনুপস্থিতির তথ্য। আর ততক্ষণে ডিএমএফ রুবেল সটকে পড়েন। মৃত জামাল বাদশাহ (৫৫) কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের মিলপাড়া এলাকার বাসিন্দা।

নিহত পরিবারের অভিযোগ, নিহত জামাল গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তার শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে পরিবারের লোকজন তাকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরে জরুরি বিভাগের সামনে ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করেও দেখা মেলে না চিকিৎসকের। পরে রুবেল নামের একজন ডিএমএফ পাস ছাত্র এসে রোগীকে দায়সারাভাবে দেখেন, ততক্ষণে রোগীর মৃত্যু হয়। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আরএমও জরুরি বিভাগ জুটে আসেন। এসময় আরএমও হাসপাতালে এসে দায়িত্বরত চিকিৎসককে ফোন দিলে তিনি বাহিরে আছেন বলে জানান। ততক্ষণে খবর পেয়ে অনেক সাংবাদিকও জরুরি বিভাগে এসে উপস্থিত হয়।

এসময় সাংবাদিকরা ভারপ্রাপ্ত আরএমও এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাতে কালিপদ সরকার নামের একজন এমবিবিএস চিকিৎসককে জরুরি বিভাগের দায়িত্ব দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ওই চিকিৎসক হাসপাতালকে না জানিয়ে তার স্থলে একজন ডিএমএফ পাস করা ছাত্রকে দায়িত্ব দিয়ে লালমনিরহাটে তার ব্যক্তিগত চেম্বারে চলে যান।

অপরদিকে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালটির জরুরি বিভাগে একজন এমবিবিএস চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও, ৫০০ টাকার বিনিময়ে নিয়মিত ডিএমএফ পাস ছাত্রকে দিয়ে চালানো হয় জরুরি বিভাগ। এমন অভিযোগ অসংখ্য রোগীর স্বজন ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের অনেক কর্মচারীর। এতে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসার অবহেলায় ঘটছে মৃত্যুর ঘটনা।

নিহত রোগীর স্বজন একরামুল হাসান বলেন, আমার ফুপার রাতে হঠাৎ শ্বাস কষ্ট দেখা দিলে হাসপাতালে নিয়ে আসি আমরা। পরে জরুরি বিভাগের সামনে ১ ঘণ্টাখানিক অপেক্ষা করেও চিকিৎসকের দেখা পাই না। পরে রুবেল নামের এক ডিএমএফ ডাক্তার এসে দেখতে দেখতে তার মৃত্যু হয়। ফুপার চিকিৎসার অবহেলায় মৃত্যু হলো। আর এমন যেন অমানবিক মৃত্যু কারও না হয় এই কামনা সরকারের কাছে।

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ভারপ্রাপ্ত ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে হাসপাতালে। কি কারণে দায়িত্বরত চিকিৎসক কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়াও অর্থের বিনিময়ে কাউকে যদি জরুরি বিভাগে দায়িত্ব দিয়ে থাকেন, তারও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিষয়টি জানতে হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক ডা. শহিদুল্লাহ লিংকন এর মুঠোফোন একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ