কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় মাদকবিরোধী আন্দোলন নতুন মাত্রা পেয়েছে। উপজেলার সর্বস্তরের জনসাধারণ মাদক নির্মূল এবং সাঞ্জুয়ারভিটা এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের দায়ের করা কথিত মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে।
মঙ্গলবার (২০ মে) সকাল ১১টায় নাগেশ্বরী উপজেলা গেটসংলগ্ন ভুরুঙ্গামারী সড়কে ঘণ্টাব্যাপী এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সাধারণ জনগণের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক এবং শিক্ষার্থী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “মাদক আজ সমাজে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। যুবসমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে এই মরণ নেশা। এ থেকে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকেও রক্ষা করা জরুরি।” বক্তারা আরও বলেন, মাদক ব্যবসায়ীরা এখন সমাজের সচেতন মানুষদের ভয় দেখাতে এবং আন্দোলন দমিয়ে দিতে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। তারা এসব ষড়যন্ত্রমূলক মামলাকে অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানান এবং প্রশাসনের কাছে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান।
আরও বলেন, “মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই যদি মিথ্যা মামলার শিকার হতে হয়, তবে সাধারণ মানুষ কীভাবে নির্ভয়ে কথা বলবে? আমরা চাই একটি মাদকমুক্ত, নিরাপদ, ন্যায়ের সমাজ। প্রশাসনের উচিত প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া।”
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন—নাগেশ্বরী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও বিশিষ্ট সমাজসেবক গোলাম রসুল রাজা, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা আব্দুল মান্নান, বণিক সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক হাজী সোহেল, পৌর স্বেচ্ছাসেবকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলাম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপজেলা শাখার আহ্বায়ক মেহেদী হাসান, যুগ্ম আহ্বায়ক সানাউল কবীর স্বাদ, যুগ্ম সদস্য সচিব মেহেদী হাসান মিমি, মুখ্য সংগঠক মোবাশ্বের হোসেনসহ আরও অনেকেই।
মানববন্ধন শেষে একটি সুসংগঠিত বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা প্রশাসন চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে বিক্ষোভকারীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) বরাবর একটি লিখিত স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপিতে তারা মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির বাস্তবায়ন ও মিথ্যা মামলার দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি জানান।
স্থানীয়দের মতে, নাগেশ্বরীর সমাজে মাদকের প্রভাব মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রশাসনের পাশাপাশি জনগণও সচেতন না হলে এই ভয়াবহতা রোধ করা সম্ভব নয়। আজকের এই কর্মসূচি প্রমাণ করে, মানুষ এখন আর ভয় পায় না—তারা তাদের অধিকার ও ন্যায়বিচারের জন্য ঐক্যবদ্ধ।