কুড়িগ্রামে অতিরিক্ত বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ১৩৪ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ ভেসে গেছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
এতে এক হাজার ৯৫৭ কৃষকের তিন কোটি ২৬ লাখ ১৬ হাজার ৯০০ টাকার ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃষ্টি ও বন্যার কারণে জেলায় ৫৪ হেক্টর বাদাম, ৪৪ হেক্টর বোরো ধান, ২৬ হেক্টর সবজি, নয় হেক্টর তিল এবং এক হেক্টর জমির মরিচ ভেসে গেছে। মোট ৩০০ একর জমি বৃষ্টির কারণে আক্রান্ত হয়েছে।
এতে এক হাজার ৯৫৭ কৃষকের তিন কোটি ২৬ লাখ ১৬ হাজার ৯০০ টাকার ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন।
রাজারহাট উপজেলার তিস্তা নদী অববাহিকার ডাংরারহাট এলাকার বাদাম চাষি হাবিবুর রহমান বলেন, তিন দিনের মধ্যে পানি বাড়ার ফলে বাদাম ক্ষেতগুলো তলিয়ে যায়। বন্যার পানির সঙ্গে পলিমাটি আসায় বাদামগুলো মাটির নিচে চাপা পড়ে গেছে। এখন ঠিকভাবে তোলা যাচ্ছে না। অধিকাংশ ক্ষেত বিনষ্ট হয়ে গেছে।
বাদাম চাষি মুস্তফা বলেন, “ভাই সব শেষ। কাদামাটি পরে বাদাম তলিয়ে গেছে। একজনের জায়গায় পাঁচজন শ্রমিক নিয়েও বাদাম তোলা যাচ্ছে না। এই হল আমাদের পরিস্থিতি। এখন কী করে বাঁচব? বাঁচার আর পথ নেই। এই বাদাম চারটা দিয়া সংসার চালাব সেটাও আর হল না। এখন ঋণের দায়ে কী হবে তা আর ভেবে পাচ্ছি না।”
কৃষক আজিজুল হক বলেন, “লাখ লাখ টাকা খরচ করে ফসল চাষ করে এখন চরম লোকসানে পড়েছি। পাওনাদারের চাপে বাড়িতে থাকতে পারব না। সরকারিভাবে কোনো সহযোগিতা করলে উপকার হত।”
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বরাতে বলেন, চলতি সপ্তাহে তিস্তা নদীর পানি সতর্কসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি সমতলে বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করেছে।
এর ফলে নদ-নদী অববাহিকায় অবস্থিত নিচু চরের জমিতে লাগানো ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে বন্যার আশঙ্কা নেই বলে জানান পাউবো কর্মকর্তা।