শিরোনাম
ঠাকুরগাঁওয়ে জুলাই যোদ্ধা তালিকায় ছাত্রলীগ নেতার নাম দেশে আরও ২৬ জনের করোনা শনাক্ত বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজের সূচি প্রকাশ সংবিধানে ‘আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিসমিল্লাহ’ সংযোজন চায় জামায়াত গত ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গুতে মৃত্যু ২, আক্রান্ত ৩২৬ গাইবান্ধায় গাঁজাসহ জামাই-শাশুড়ি গ্রেফতার দেশের উচ্চশিক্ষার আধুনিকায়নে মিশ্র শিক্ষণ পদ্ধতি গুরুত্বপূর্ণ: বেরোবি উপাচার্য আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলে বাংলাদেশকে সর্বগ্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত করা হয় : তারেক রহমান ‘রংপুর এক্সপ্রেস’ ট্রেনের টয়লেটে যাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ, রেলের কর্মচারী আটক মব সন্ত্রাসের জননী শেখ হাসিনা: বিএনপি নেতা ফারুক
বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ০৮:৫৫ অপরাহ্ন

কুড়িগ্রামে বিরল রোগে আক্রান্ত বাঁচতে চায় মোকাররম

ডেস্ক নিউজ : / ১৩৬ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫

 

মাত্র ১২ বছর বয়সেই জীবনযুদ্ধে হেরে যেতে বসেছিল এক মেধাবী কিশোর। নাগেশ্বরীর উপজেলার কালীগঞ্জ এর চর বেগুনী পাড়ার ছেলে মোঃ মোকাররম। ২০১৩ সালে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় তার শরীরে শুরু হয় হালকা চুলকানি, যা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে সারা দেহে। এর পরই বন্ধ হয়ে যায় তার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা, থেমে যায় পড়ালেখা।

মোকাররমের পরিবার এমনিতেই চরম দুঃসহ বাস্তবতার মধ্যে ছিল। বাবা মোঃ কোরবান আলী, মা ছিলেন মৃত বাহার উদ্দিন। চার ভাইয়ের মধ্যে মোকাররম তৃতীয়। বড় ভাই মানসিকভাবে অসুস্থ, যাকে প্রায়ই বেঁধে রাখতে হয়। এ অবস্থায় মোকাররমকে প্রথমে নেওয়া হয় কুড়িগ্রাম পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে, সেখান থেকে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শে ঢাকার পিজি হাসপাতালে পাঠানো হয়।

সেখানে ২৫ জন চিকিৎসক এবং পরবর্তীতে আরও ১০০ জন বিশেষজ্ঞ তার রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। ১২ দিন চিকিৎসার পর তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়া হয় এবং বলা হয় ৪৫ দিন পর আবার আসতে। কিন্তু আর্থিক সংকটে পড়ে আর ফিরিয়ে নেওয়া যায়নি। এর মধ্যেই ২০১৬ সালে তার মা মারা যান এবং একই বছর একটি অগ্নিকাণ্ডে তাদের ঘরসহ পিজি হাসপাতালের সমস্ত ডকুমেন্টস পুড়ে যায়।

রোগটি এতটাই যন্ত্রণাদায়ক ও অজানা যে মোকাররম ঠিকমতো বসতে পারে না, কথাও স্পষ্ট বলতে পারে না, তার সারা শরীরে তীব্র জ্বালাপোড়া অনুভূত হয়। দীর্ঘদিন পর ২০২৪ সালে এলাকাবাসীর সহায়তায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই আংশিকভাবে তার রোগ শনাক্ত হয়। বিশ্বে মাত্র ৩০০ জন এই বিরল রোগে আক্রান্ত, আর বাংলাদেশে মোকাররমই একমাত্র। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এর এখনো কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। মোকারমের পরিবারের নাম্বার: ০১৭১৯১৬৩৬৩৮

সম্প্রতি মোকাররমের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়, যেখানে সে চিকিৎসার জন্য দেশবাসীর কাছে আকুতি জানায়। ভিডিওটি রশিদ মন্ডল যুব ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজানের চোখে পড়লে, তিনি মুহূর্তেই সিদ্ধান্ত নেন এই দুঃখী কিশোরের পাশে দাঁড়াবেন।

আজ ১লা মে তিনি মোকাররমের বাড়িতে গিয়ে তার প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ ও নগদ ৬,০০০ টাকা প্রদান করেন এবং পরিবারকে আশ্বাস দেন যে, তিনি দীর্ঘমেয়াদে মোকাররমের পাশে থাকবেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মোবারক আলী, যিনি বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে এবং সরকারের পক্ষ থেকেও এই অসহায় ছেলেটির চিকিৎসায় চেষ্টা করেছি। তবে রোগটি এতই জটিল যে এখনও নির্দিষ্টভাবে নির্ণয় করা যায়নি। যে ওষুধ তাকে দেওয়া হচ্ছে, তা সংগ্রহ করাও পরিবারটির জন্য দুঃসাধ্য।”

স্থানীয় মানবিক ব্যক্তিত্ব লাভলু, গ্রীন ভয়েস নাগেশ্বরী উপজেলা শাখার সভাপতি মাইদুল ইসলাম মামুন, প্রথম টিভির প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক মুহতাসিম বিল্লাহসহ আরও অনেকে এই সহানুভূতিমূলক মুহূর্তে উপস্থিত ছিলেন।

এলাকাবাসী এই উদার সহায়তায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং মোকারমের চিকিৎসা ও জীবনযাপনের জন্য সকলের কাছে একটি স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ