কয়টা দিন পাইলে ধানগুলা মাচাত উঠতো। এতো খরচ করি আবাদ করলোং। খাবারে পাইনা মনে হয়।’ কথাগুলো বলছিলেন রাজারহাট উপজেলার তিস্তাপাড়ের কৃষক মামুনুল ইসলাম। চলতি মৌসুমে চার একর জমিতে বোরো ধান চাষ করেছেন। দুই একর জমির ধান ইতোমধ্যে কেটে মারাই করতে পেরেছেন, কিন্তু শুকতে পারেননি বৃষ্টির কারণে।
বুধবার (২১ মে) সকালে রাজারহাট উপজেলার তিস্তাপাড়ের বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে কৃষকদের দুর্দশা। কেউ কেউ কলাগাছের ভেলা সাজিয়ে পানির নিচে ধান কাটছে। তবে রোদ না থাকায় এসব কাটা ধান ঠিকমতো ঘরে উঠবে কিনা তা নিয়েও শঙ্কায় কৃষকরা। কেউ কেউ ঘুরে দেখছেন ডুবন্ত ধান ক্ষেত। এছাড়াও বাদাম, পাট, তিল, মরিচসহ বিভিন্ন সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে।
মামুনুল ইসলাম বলেন, ‘বাকি দুই একর তলিয়ে গেছে উজানের ঢলের পানিতে। ঘরের ধান না শুকাতে পারলে এসব ধান কেটে কি করতাম। আগের গুলা তো নষ্ট হয়ে যেইতেছে। এগুলা কাটি কোডাই থুই।’
কৃষক মামুনুলের মতো কুড়িগ্রামের শত কৃষকের ধান, বাদাম, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসল এখন পানির নিচে। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও উজানে বৃষ্টির ফলে তিস্তা ও ধরলাপাড়ের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে হয়েছে এসব ফসল নষ্টের পথে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (খামারবাড়ি) তথ্য বলছে, জেলায় একশ’ ২১ হেক্টর বোরো আবাদ, ৭৫ হেক্টর বাদাম, ৪১ হেক্টর পাট, ৪৯ হেক্টর বিভিন্ন সবজির ক্ষেত। কৃষি সংশ্লিষ্টরা বলছে, পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে ৭৫ হেক্টর বাদাম ক্ষেতসহ মোট তিনশ’ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল। টানা বৃষ্টি থাকায় নতুন করে ফসলহানির শঙ্কা বাড়ছে। কৃষকরা বলছেন, অন্যবারের থেকে এবার আগাম বৃষ্টি শুরু হওয়ায় বেশি ক্ষতি হচ্ছে। জৈষ্ঠ্য মাসের শেষ থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে।