কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের পুড়িয়ে দেওয়া দলীয় কার্যালয় থেকে ‘চর উন্নয়ন কমিটির’ সাইনবোর্ড নামিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিএনপির নেতারা।
সোমবার (১২ মে) রাতে সাইবোর্ডটি নামিয়ে ফেলা হয়। মঙ্গলবার (১৩ মে) সকাল থেকে সাইনবোর্ডটি আর দেখা যায়নি। উলিপুর উপজেলা ‘চর উন্নয়ন কমিটির’ আহ্বায়ক সোলায়মান আলী সরকার আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে সাইনবোর্ড সরিয়ে ফেলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত রোববার বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ‘চর উন্নয়ন কমিটির’ সাইনবোর্ড লাগানো হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে জেলাজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়। নড়েচড়ে বসেন জেলা বিএনপির নেতারা। পরে সোমবার রাতে সাইনবোর্ডটি নামিয়ে ফেলেন সংশ্লিষ্টরা।
এর আগে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দিন উপজেলা আওয়ামী লীগের ওই কার্যালয়টিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পুড়ে যাওয়া কার্যালয়টিতে বর্তমানে দরজা জানালা নেই।
জানা গেছে, উলিপুর উপজেলা ‘চর উন্নয়ন কমিটির’ আহ্বায়ক সোলায়মান আলী সরকার পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং যুগ্ম আহ্বায়ক এরশাদুল হাবীব নয়ন উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এছাড়া কমিটির বেশিরভাগ সদস্য বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে।
আহ্বায়ক সোলায়মান আলী সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, সোমবার রাতে আমরা সাইনবোর্ড সরিয়ে ফেলেছি। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা ও বিতর্ক হচ্ছিল। বিতর্ক এড়াতে সাইনবোর্ড নামিয়ে ফেলা হয়েছে। আমরা মনে করি, অনুমোদন ছাড়া সাইনবোর্ড লাগানো উচিত হয়নি। চর উন্নয়ন কমিটি একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। এটি ব্যক্তি বা কোনো দলের নয়। আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য সব দলমতের মানুষদের নিয়ে এটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে সবাই বিএনপিকে দোষারোপ শুরু করেছিল। ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছিল। পরে আমরা সাইনবোর্ড নামিয়েছি।
কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম বেবুকে আহ্বায়ক এবং সদস্য আশরাফুল হক রুবেলকে সদস্য সচিব করে ‘চর উন্নয়ন কমিটি’ কুড়িগ্রাম জেলা আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলার বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রাধান্য দিয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন উপজেলা কমিটি গঠন করে সভা সমাবেশ করছে সংগঠনটি।
বিএনপি ও সমমনা লোকদের নিয়ে ‘চর উন্নয়ন কমিটি’ গঠন করা হলেও দায়িত্বশীলদের দাবি, এটি একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। যদিও এই কমিটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে খোদ বিএনপির নেতাদের মধ্যে সন্দেহ সংশয় ও প্রশ্ন রয়েছে। এছাড়া এই কমিটির সভা সমাবেশ আয়োজনের খরচ মেটাতে যে অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে তার উৎস নিয়েও জনমনে প্রশ্ন রয়েছে।