বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ১১:০০ অপরাহ্ন

কালুরঘাট সেতুতে ট্রেন না থামলেও, থেমে গেল শিশু আয়েশার জীবন

ডেস্ক রিপোর্ট / ৫৪ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ৬ জুন, ২০২৫

চট্টগ্রামের কালুরঘাট রেলসেতুতে মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে দুই বছরের শিশু আয়েশা। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাতে বাবা-মায়ের সঙ্গে অটোরিকশায় থাকা অবস্থায় ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ হারায় নিষ্পাপ শিশুটি। মেয়েকে হারিয়ে নিঃশেষ বাবা সাজ্জাদ নূর মিঠুর আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা।

স্ত্রী জুবাইদা ফেরদৌস ইসরা ও একমাত্র সন্তান আয়েশাকে নিয়ে অটোরিকশায় ছিলেন মিঠু। কালুরঘাট ব্রিজের বোয়ালখালী অংশে ঘটে যায় দুর্ঘটনা। তাদের অটোরিকশাটি সেতুর ওপর আটকে পড়ে আর ঠিক তখনই দ্রুতগতিতে উঠে আসে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেন। মুহূর্তেই ওলটপালট হয়ে যায় সবকিছু।

বুকফাটা কষ্টে ভেঙে পড়া আয়েশার বাবা মিঠু বলেন, আমরা অটোরিকশায় ছিলাম। এটা একেবারে শেষে ছিল। আমাদের সামনে একটা টেম্পো ছিল। ট্রেনের চালক বারবার হর্ন দিচ্ছিলেন। লাইনম্যান ব্রিজের ওপর চলে আসে। টেম্পোটা ক্রস করে চলে যায়। কিন্তু আমাদের অটোরিকশা আটকে যায়। আমি জানি না এটা কাদের গাফিলতি। তবে কর্তৃপক্ষ এজন্য দায়ী।

আমার একটাই দাবি, এই সেতুতে আমি আর ট্রেন চলতে দেব না। যদি চলে তবে আমি আমার জীবন দিয়ে দেব। আমি আল্লাহর গজব দিচ্ছি। আমার ২ বছরের বাচ্চা। আমার ৩০ বছর বয়স, আমি গোনাহ করেছি কিন্তু সে তো নিষ্পাপ।

প্রত্যক্ষদর্শী ও রেল কর্তৃপক্ষের ভাষ্য অনুযায়ী, দুর্ঘটনার সময় একটি গাড়ি সেতুর ওপর নষ্ট হয়ে যানজট সৃষ্টি করে। তখন কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামমুখী ট্রেনটির চালক লাল সিগন্যাল ও গার্ডের লাল পতাকা উপেক্ষা করে দ্রুতগতিতে কালুরঘাট সেতুতে ওঠে পড়ে। এর ফলে অটোরিকশা, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলসহ কয়েকটি গাড়িকে ধাক্কা দেয় ট্রেনটি।

এতে শিশু আয়েশাসহ মোট তিনজন নিহত ও পাঁচজন আহত হন। আয়েশা বাদে নিহত আরেকজন হলেন মোহাম্মদ তুষার। এ ছাড়া আহত তিনজনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন- আসিফ উদ্দিন বাপ্পি, আসমা আহমেদ ও আঞ্জু আরা। বর্তমানে আহত পাঁচজনেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

দুর্ঘটনার বিষয়ে জালানিহাট স্টেশন মাস্টার মো. নেজাম উদ্দিন বলেন, ট্রেনটি রাত ১০টা ১০ মিনিটে এটি কালুরঘাট রেলসেতুর অদূরে পৌঁছায়। ওইসময় সেতুর ওপরে একটি গাড়ি নষ্ট হয়ে গেলে যানজট তৈরি হয়। আমরা তখনই লাল সিগন্যাল দিই। গার্ডও হাতে লাল পতাকা নিয়ে সিগন্যাল দেন। কিন্তু চালক সিগন্যাল মানেননি। কালুরঘাট ব্রিজটি ডেড স্টপেজ হিসেবে চিহ্নিত। এখানে ট্রেন থামিয়ে ধীরে ব্রিজে ওঠার নিয়ম। চালক তা মানেননি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ