লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার নাম পরিবর্তন করে ‘তুষভান্ডার উপজেলা’ করার প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে তীব্র আলোচনা-সমালোচনা । বিষয়টি ঘিরে ফেসবুকে সৃষ্টি হয়েছে বিতর্কের ঝড়। কেউ নাম পরিবর্তনের পক্ষে মত দিচ্ছেন, আবার কেউ বিরোধিতা করছেন তীব্রভাবে । কেউ কেউ জড়িয়ে পড়ছেন বাকবিতণ্ডায়ও।
নাম পরিবর্তনের প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে কালীগঞ্জ ও তুষভান্ডারের মধ্যে বিরোধ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল। কেউ কেউ সম্ভাব্য দাঙ্গা ও অস্থিরতার শঙ্কাও প্রকাশ করেছেন।
নাম বহাল রাখার দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব হয়েছেন উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। প্রবাসী, তরুণ প্রজন্ম, শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং সুশীল সমাজের অনেকেই ‘কালীগঞ্জ’ নাম রাখার পক্ষে মত দিচ্ছেন।
সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসন এক মতামত সভার উদ্যোগ নিলেও জাতীয় শোক দিবসের কারণে তা স্থগিত হয়। এরপর থেকেই ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা নতুন মাত্রা পায়।
নাম পরিবর্তন প্রসঙ্গে ভিন্ন ভিন্ন মতামতও উঠে আসছে ফেসবুকে।
কামরুল হক রাজন লিখেছেন, “বাংলাদেশে কালীগঞ্জ নামে মোট চারটি থানা রয়েছে। সেক্ষেত্রে আমাদের উপজেলার নাম পরিবর্তন করলে সেটা সবার জন্যই ভালো হবে।”তিনি উল্লেখ করেন-কালীগঞ্জ থানা, গাজীপুর কালীগঞ্জ থানা, ঝিনাইদহ,কালীগঞ্জ থানা, লালমনিরহাট,কালীগঞ্জ থানা, সাতক্ষীরা।
সবুজ খান মন্তব্য করেছেন, “তুষভান্ডার উপজেলা হওয়াই উচিত। তুষভান্ডারের নামে রেলওয়ে স্টেশন, উপজেলা অফিসসহ প্রায় সব সরকারি অফিস তুষভান্ডারে অবস্থিত। এতে বিভ্রান্তির সুযোগ কমে যাবে।”
শিক্ষক জি.এম. তাজু লেখেন, “উপজেলার বেশিরভাগ দপ্তরের ঠিকানায় ‘তুষভান্ডার’ লেখা দেখা যায়। অথচ ‘কালীগঞ্জ’ নামটি দেশের আরও কয়েকটি উপজেলার নামের সঙ্গেও মিল রয়েছে। বিভ্রান্তি এড়াতে নাম পরিবর্তন জরুরি।”
অন্যদিকে, নাম পরিবর্তনের বিরোধিতাও তীব্র।
তৌহিদ হাসান নামে একজন লেখেন,
“কালীগঞ্জে একটা মিসাইল মেরে দেন ভাই! এতো বছর ধরে তো কোনো সমস্যা হয়নি, এখন হঠাৎ করে সমস্যা তৈরি করছেন কেন?”
মোঃ জিয়া উদ্দিন মন্তব্য করেন,“এটা নিছকই একটি ষড়যন্ত্র, যা শান্তিপ্রিয় মানুষের মাঝে বিভাজন তৈরি করতে পারে।”
সচেতনমহলের অনেকেই মনে করেন, গত তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে ‘কালীগঞ্জ উপজেলা’ নামটি বহাল থাকলেও উপজেলা সদরের প্রায় সব কার্যক্রম হয় তুষভান্ডারে। ফলে প্রশাসনিক সুবিধা ও বাস্তবতা বিবেচনায় ‘তুষভান্ডার উপজেলা’ নামকরণে বড় ধরনের সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
এদিকে, নাম পরিবর্তনের বিরোধিতায় কালীগঞ্জ উপজেলার একাংশ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।