অর্থের বিনিময়ে (ভিডব্লিউবি) কার্ড, বয়স্ক, বিধবা ‘ভাতার কার্ড’ করে দেওয়া, স্বজনপ্রীতি সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য এসএম আমিরুল ইসলাম পলাশ মেম্বার এর বিরুদ্ধে।
অভিযোগ আছে , উপকারভোগী কার্ড করার জন্য কখনো প্রাপ্ত ভাতার সমুদয় টাকা, কখনো অগ্রিম, কখনো বা ভাতার টাকার একটি অংশ দিতে বাধ্য করেন ইউপি সদস্য পলাশ। আবার, টাকা দেওয়ার বিষয়টি প্রকাশ করলে হেনস্তার শিকার কিংবা কার্ড বাতিলের হুমকিও দেন তিনি। এছাড়া অভিযোগ রয়েছে , নিজের পরিবারের ও আত্মীয়স্বজনের নামে টিসিবি , মাতৃকালীন ভাতা ও (ভিডব্লিউবি) কার্ড সহ নানা রকম সরকারি সুবিধা ভোগ করেন ইউপি সদস্য পলাশ।
নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক একাধিক ইউপি সদস্য এবং ভুক্তভোগীরা জানান, ইউপি সদস্য এসএম আমিরুল ইসলাম পলাশ টাকা ছাড়া কোন কাজ করেন না। অভিযোগ রয়েছে , প্যানেল চেয়ারম্যানের হওয়ায় সুবাদে ইউনিয়নের প্রয়োজনীয় রাস্তা সংস্কার না করে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের যাতায়াতের সুবিধার জন্য অপ্রয়োজনীয় রাস্তা সংস্কারের নামে টাকা আত্মসাৎ করেন।
এ বিষয়ে একজন ভুক্তভোগী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও অদ্যাবধি এর কোন প্রতিকার পায়নি অভিযোগকারী।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, উপজেলা বালাপাড়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড বাসিন্দা হতদরিদ্র রিক্সা চালক সোহেল মিয়ার স্ত্রী আফরোজা বেগম স্বামী সারাদিন রিক্সা চালায়ে যে ক’ টা টাকা উপার্জন করে সেটা নিয়ে চার জনের সংসারে নুন আন্তে পান্তা ফুরায় অবস্থা। গত ০৩ মাস আগে ০৬ নং ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ আমিনুল ইসলাম পলাশ আমার নিকট এসে বলে যে, তুমি আমাকে ৭০০০/- (সাত হাজার) টাকা দিলে আমি তোমার ভিজিডি কার্ড করে দিব। কিন্তু আমার অভাব অনাটনের সাংসারে এতো টাকা কোথা থেকে দিবো? তখন ওই সেবাগ্রহীতা পলাশ মেম্বারকে ৫০০০/- (পাঁচ হাজার) টাকার বিনিময়ে একটা কার্ড করে দেয়ার অনুরোধ করেন । মেম্বার এতে রাজি হলে নগদ ৩০০০/- (তিন হাজার) টাকা প্রদান করি এবং ২ দিন সময় নিয়ে ২০০০/- (দুই হাজার) টাকা বাকি রাখি এবং বলি যে, কার্ড হাতে পাইলে ২০০০/- (দুই হাজার) টাকা প্রদান করিব মর্মে আমাদের মাঝে মৌখিক চুক্তি হয়। কিন্তু গত ০৭/০৭/২০২৫ ইং তারিখে উক্ত মেম্বার আমার নিকট এসে প্রদানকৃত ৩০০০/- (তিন হাজার) টাকা ফেরত দিয়ে বলে যে, তোমার কার্ড টি হয়নি। কার্ড না হওয়া বিষয়ে জানতে চাইলে পলাশ মেম্বার আমাকে ভয় ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে বলেন এবিষয়ে কাউকে কিছু বললে তার এবং সন্তানের সমস্যা হবে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য পলাশ মেম্বারের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর যে লিখিত অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।
এ বিষয়ে বালাপারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনসার আলীর ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার ফোন দিলে, নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।
লিখিত অভিযোগের বিষয়ে যানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিদুল হক জানান, একজন অফিসারকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্তে সাপেক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।