রংপুরের কাউনিয়ায় কয়েকদিনের অবিরাম টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পরবর্তীতে কমতে শুরু করেছে পানি তবে নতুন করে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে৷ পানির ঢেউ এসে নদীর তীরে ধাক্কা লাগছে । এতে ভাঙছে নদীর তীর ও বসতভিটা। দুশ্চিন্তায় ঘুমহীন রাত কাটাচ্ছেন তিস্তাপারের লোকজন।
সরেজমিনে দেখা যায়, শনিবার সকালে উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের হাজীপাড়া এলাকায় কিছু পরিবারের বসতভিটা সহ আবাদি জমি নদীর গর্ভে চলে যাচ্ছে৷ বসতভিটার ও বাড়ির উঠান হারিয়ে এসব লোকজন বাড়িঘর কোথায় সরিয়ে নেবেন তা নিয়ে বিপাকে আছেন তারা।
৫৬ বছর বয়সী কৃষক মনসুর আলী জানান, কয়েক বছরে আগে ২৫ শতক জমি ক্রয় করে বসতবাড়ি নির্মাণ করেছিলেন, প্রায় ২০ শতাংশ আবাদি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। এখন মাত্র পাঁচ শতক জমির ওপর বসতভিটা আছে। এখানে-ওখানে কাজ করে সংসার চলে তাঁর৷ বর্তমানে তার বসতঘর থেকে তিস্তা নদীর দূরত্ব মাত্র ৫ ফিট৷ তিনি আরোও বলেন, আজ রাতের মধ্যেই সেটিও আবার ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘এবার বাড়িভিটা নদীত চলি গেইলে, আর কোনো জমি থাক পার নয়। নদী হামার শোগ শেষ করি দেলে।’
৫০ বছর বয়সী হাফেজ আলীর ৩০ শতাংশ আবাদি জমি কয়েকদিনের মধ্যে নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে। এবার বসতভিটা ভাঙনের মুখে। যেকোনো সময় নদীতে বিলীন হতে পারে। হাফেজ আলী বলেন, ‘গত বছর বন্যার সময় নদী অনেক দূরোত আছলো। এবার পানি বাড়া-কমার কারণে তাড়াতাড়ি ভাঙন শুরু হইছে। এবার আর বসতভিটা রক্ষা হওছে না।’
এ বিষয়ে টেপামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম জানায়, তার ইউনিয়নের রাজিব, হরিচরণ শর্মা, হয়বতখাঁ, বিশ্বনাথ গ্রামে তিস্তার ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কথা বলে ৪/৫ হাজার জিওব্যাগ চেয়ে মাত্র ২৫০টি জিওব্যাগ বরাদ্দ পাওয়া গেছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আহসান হাবিবের মুঠোফোনে ফোন করা হলে তিনি কল না ধরায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিদুল হক বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি। তারা দ্রুত ভাঙনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।