রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মারের বিরুদ্ধে অনুদানের নামে চাঁদা চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ‘৩৬ জুলাই: মুক্তির উৎসব’ কনসার্ট আয়োজনের জন্য আর্থিক অনুদান চেয়ে তিনি ৭০টির বেশি প্রতিষ্ঠানে চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সালেহ হাসান নকীবের সুপারিশ রয়েছে—‘স্ট্রংলি রিকমেন্ডেড।’
এদিকে সিটি করপোরেশন থেকে ২ লাখ টাকা অনুমোদন পাওয়ার পরও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে অনুদান প্রত্যাখ্যাত হয়েছে বলে জানা গেছে। বাজেটের পরিমাণ ৬০-৬৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হলেও এখনো অনেক প্রতিষ্ঠান থেকেই অর্ডার আসেনি।
৩৬ জুলাই’ দিবসটি রাজশাহীর ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। গত বছরের ‘জুলাই আন্দোলন’-এ শহীদ ও আহতদের স্মরণে আয়োজন করা হবে এই উৎসব। তবে এই আয়োজনের জন্য তোলা অর্থের উৎস, উপাচার্যের সুপারিশ এবং আয়োজকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বাজেটের বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, দুই দিনের কনসার্টের আয়োজনের জন্য মঞ্চ নির্মাণ, অতিথি আপ্যায়ন ও নিরাপত্তাসহ অন্যান্য খাতে খরচ দেখানো হচ্ছে। তাতে প্রতিষ্ঠানের অর্থ সহায়তার প্রয়োজনীয়তা শক্তিশালীভাবেই তুলে ধরা হচ্ছে। তবে বিতর্কের মূল বিষয় হলো—এই আয়োজনের অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য।
অন্যদিকে সালাউদ্দিন আম্মার দাবি করেছেন, তিনি সংগঠনের জন্য এ ধরনের সহযোগিতা চেয়েছেন; কিন্তু এটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন।
এদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যপক সালেহ হাসান নকীব নিজের দায়িত্বে সালাউদ্দিনের অনুরোধে সুপারিশ করেছেন বলে জানা গেছে। তিনি বলেছেন, ‘যে কোনো সংগঠন বা উদ্যোগ যেগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি সম্মান দেখায়, আমি তাদের সহযোগিতা করতে পারি। এটি আমার দায়িত্ব।’
তবে প্রশ্ন উঠেছে—এমন সুপারিশ কি আদৌ সঠিক? একাডেমিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কোনো সাংস্কৃতিক বা বেসরকারি আয়োজনে প্রশাসনিক সহায়তা দেওয়ার আগে কি আরও যাচাই-বাছাই করা উচিত ছিল? এমন প্রশ্ন সচেতন মহলের।
জানা গেছে, অনুদান সংগ্রহের প্রক্রিয়ায় ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক এবং চেম্বার অব কমার্সের মতো কিছু প্রতিষ্ঠান সামান্য পরিমাণ সহযোগিতা দিয়েছে। কিন্তু, ব্যাংকগুলো এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাফ প্রত্যাখ্যান—এটা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে যে, আসলে কতটা যৌক্তিক ছিল এই আবেদন। একইভাবে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্কের ঝড় উঠলেও আয়োজক সালাউদ্দিন জানিয়েছেন, ‘তিনি সব কিছু স্বচ্ছভাবে উপস্থাপন করবেন এবং প্রতিটি টাকার হিসাব রাখা হবে।’
এবার ‘বিজয় উৎসব’ আয়োজনের পরিকল্পনাও রয়েছে রাজশাহীতে, যা সালাউদ্দিন গত বছরের ফেনী বন্যার কারণে করতে পারেননি।