এবারের নির্বাচনে বিএনপি কারো সঙ্গে জোট বাঁধবে কিনা, তা এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক রুমিন ফারহানা। সেই সঙ্গে এই সরকারের ব্যর্থতার ফলে আ. লীগের প্রত্যাবর্তন হতেও পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি একটি টক শোতে হাজির হয়ে এসব কথা বলেন রুমিন ফারহানা।
বিএনপির জোট বাঁধা প্রসঙ্গে রুমিন বলেন, ‘নির্বাচনে এখনো চারমাস বাকি আছে।
যদি কোন জোট হয় সেটা হতেই পারে চার মাসে। সেই ব্যাপারে আমি এখনো স্পষ্ট কিছু জানি না। তবে একটা বিষয় আমি খুব পরিষ্কার বলতে চাই। অতীতে আমরা যেরকম জোট দেখেছি বা যেই ধরনের নির্বাচন দেখেছি, যেমন- আচ্ছা ঠিক আছে অমুক এলাকায় আমরা নৌকা মার্কা দেবো না।
কিংবা অনেকের পোস্টারে আমরা দেখেছি নৌকা সমর্থিত লাঙ্গলের প্রার্থী। আপনার নিশ্চয়ই মনে থাকবে। আওয়ামী লীগ সমর্থিত জাতীয় পার্টির প্রার্থী। এই ধরনের কোনো নির্বাচন বাংলাদেশে হোক এটা আমি একজন নাগরিক হিসেবে একজন আইনজীবী হিসেবে এবং একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে একদম চাই না।’
রুমিন আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের নির্বাচনে যদি এরকম হয় যে কোনো একটা দল অস্বাভাবিক ওভারওয়েলং মেজরিটি পেতে যাচ্ছে মানুষ যদি তাকে ভোট দেয় তাকে পেতে দেন। মানে সে আরেকটা দলের সঙ্গে জোট করার কারণে অমুক আসন ছেড়ে দেওয়া তমুক আসন ছেড়ে দেওয়া এবং ছেড়ে দিয়েও যে খুব লাভ হবে এইবারের নির্বাচনে সেটাও আমি মনে করি না। কারণ, কোনো আসনে যদি সেকেন্ড, থার্ড, ফোর্থ, ফিফথ ক্যান্ডিডেটও ইন্ডিপেন্ডেন্ট দাঁড়িয়ে যায় ওই দল থেকে জোটের প্রার্থীর পক্ষে জেতাটা কঠিন হবে।’
জামায়াত ইসলাম বিএনপিকে ছাড়াই একটি জোট করবার পরিকল্পনা করেছে। সেখানে ডানপন্থী, বামপন্থী সবাই আছে।
শুধু বিএনপি থাকবে না এরকম কথা স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘কারা কারা থাকবে এটা যদি আরো স্পষ্ট করে বলতেন তাহলে আমাদের জন্য ভালো হতো। শুধু বলা আছে ডানপন্থী, বামপন্থী, মধ্যপন্থী সবাই নাকি থাকবে।’
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া ও রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তন প্রসঙ্গে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত আছে, নিষিদ্ধ না। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত আছে এবং এটা একটা সরকারি সিদ্ধান্ত যে সিদ্ধান্ত সরকার তার নিজস্ব ক্যালকুলেশন থেকে নিয়েছে। দেখুন সরকার যদি একটা স্মুথ ল্যান্ডিং করতে পারতো বাংলাদেশের, যে একটা ঝড়ের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ গেছে গত ১৫ বছর এবং আরো ভয়ানক পরিস্থিতি হয়েছে গত ২৪ সালের আগস্ট এবং জুলাই মাসে। তারপরে যদি একটা বছরে গভর্নমেন্ট একটা মোটামুটি স্মুথ ল্যান্ডিং-এ বাংলাদেশকে নিতে পারতো, তাহলে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ফিরে আসা কঠিন ছিল। আজকে আওয়ামী লীগের যেই ঝটিকা মিছিল আপনারা বনানী বা ধানমন্ডিতে দেখছেন, আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর যে টেলিফোন কনভারসেশনগুলো আমরা ভাইরাল হতে দেখছি, তার একটাও হতে পারতো না।
আওয়ামী লীগকে ক্ষমা চেয়েই বাংলাদেশের রাজনীতিতে আসতে হতো। কিন্তু আমি কিছুদিন আগে দেখছিলাম একটা বিদেশি চ্যানেলে আওয়ামী লীগের একজন খুব প্রমিনেন্ট নেতা প্রশ্ন করছেন যে আওয়ামী লীগ যা যা করেছেন এবং উনি একটা একটা করে উদাহরণ দিয়ে দেখাচ্ছিলেন, সেই একই ঘটনা যদি আমরা ২৪-এর পরেও বাংলাদেশে ঘটতে দেখি, আমরা যদি গত এক বছরে একই ঘটনা বিভিন্ন ফর্মে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় একই ঘটনা ঘটতে দেখি, তাহলে আপনারা আওয়ামী লীগের সমালোচনা কেন করেছিলেন? আমার কাছে মনে হয়েছে যে আপনি যদি আপনার কার্যক্রমের মধ্যে দিয়ে আপনাকে শ্রেষ্ঠতর প্রমাণ করতে না পারেন তাহলে আওয়ামী লীগের ফিরে আসা আপনি কোনভাবে ঠেকাতে পারবেন না।’