ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেছেন, মার্কিন হামলার পাল্টা জবাব দেওয়ার অধিকার রাখে ইরান। গত ১৩ জুন ইসরায়েল হঠাৎ ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোয় হামলা চালিয়ে বসার পরও ইরানের কর্তাব্যক্তিরা এমনটাই বলেছিলেন।
এরপর সপ্তাহ খানেকের বেশি সময় ধরে তেহরান ও তেল আবিব আকাশপথে একে অপরের বিভিন্ন স্থাপনায় লাগাতার হামলা পাল্টা হামলা চালিয়ে গেছে।
ইসরায়েলের পীড়াপীড়ির পর এখন আনুষ্ঠানিকভাবে দৃশ্যপটে হাজির হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, তারা ইসরায়েলের সঙ্গী হয়ে নাতানজ, ইসফাহান ও ফোরদোর পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালিয়ে সেগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে।
তিন স্থাপনায় মার্কিন হামলার কথা স্বীকার করেছে ইরানও। এর প্রতিক্রিয়ায় এখন তারা কী করবে, তা নিয়ে বিশ্বজুড়ে প্রবল উদ্বেগ ও কৌতূহল চলছে।
বিবিসির নিরাপত্তাবিষয়ক প্রতিবেদক ফ্রাঙ্ক গার্ডনার মনে করছেন, ইরানকে এখন তিন কৌশলের মধ্যে একটিকে বেছে নিতেই হবে।
এর মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে—কিছুই না করা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এরই মধ্যে ইরান পাল্টা হামলা চালালে ‘আরও তীব্র ও শক্ত জবাবের’ হুমকি দিয়ে রেখেছেন। তেহরান যদি এখন ওয়াশিংটনের হামলার জবাবে কিছুই না করে, তাহলে ট্রাম্পের আরও হামলা থেকে মুক্তি পাবে। এই সূত্রে কূটনৈতিক চ্যানেলে আলোচনাও জোরদার হতে পারে।
কিন্তু এমন ক্ষেত্রে ইরানের শাসনব্যবস্থাকে ভয়ানক দুর্বল দেখাবে। এতদিন ধরে তারা তাদের ওপর হামলা হলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে জবাব দেওয়ার যেসব হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল, সেগুলোকে মনে হবে ‘অক্ষমের আস্ফালন’; মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশে তাদের প্রভাব ‘নাই’ হয়ে যাবে।
দ্বিতীয় যে বিকল্প এখন ইরানি সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির হাতে আছে, তা হলো—দ্রুত ও কঠোর পাল্টা আঘাত।
ইসরায়েলের এত এত হামলার পরও ইরানের হাতে এখনো বিপুল ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র থাকার কথা। মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে থাকা ২০টির মতো মার্কিন ঘাঁটিকে নিশানা করতে পারে তারা। ড্রোন ও দ্রুতগতির টর্পেডো নৌযান দিয়ে মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজে ‘ঝাঁক বেঁধে আক্রমণ’ চালাতে পারে তারা।