কুড়িগ্রামের চিলমারীতে স্থানীয় সাবেক এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্প হস্তান্তরের আগেই একটি ব্যারাক দখলের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এসময় ওই নেতা ব্যারাক মাঝখানের দেয়াল ভেঙে চারটি কক্ষকে দুইটি কক্ষে পরিণত করতে দেখা গেছে। তবে দেয়াল ভাঙার বিষয়টি ভুল করেছেন বলে জানান সাবেক এই বিএনপি নেতা।
ঘটনাটি ঘটেছে, উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের মধ্য কড়াইবরিশাল আশ্রয়ণ প্রকল্পে।
অভিযুক্ত ওই নেতার নাম ওবাইদুল ইসলাম। তিনি নিজেকে চিলমারী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব পরিচয় দেন।
সরেজমিন বৃহস্পতিবার (১৪ আগষ্ট) সকালে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গেলে আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাঁচ জনের বরাদ্দের ৫ টি কক্ষ বিশিষ্ট একটি ব্যারাক একাই দখলে নেয়ার চিত্র দেখা গেছে ওই নেতার। এসময় চোখে পড়ে ওই কক্ষের মাঝখানের দেয়াল নিয়ম না মেনে ভেঙে ফেলেছেন। তবে, না প্রকাশে অনেকে মন্তব্য করেছেন দলীয় প্রভাবেই এ কাজ তিনি করেছেন।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় পাঁচ বছর আগে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের তত্বাবধানে মধ্য কড়াইবরিশাল আশ্রয়ন প্রকল্পটি নির্মাণ করা হয়। এতে করে ৩৫ ব্যারাক ১৭৫ টি পরিবার থাকার উপযোগী করে গড়ে তোলা হয়েছিল। তবে, প্রশাসনের পক্ষ হতে এখনো এই আশ্রয়ণ প্রকল্পটি সুবিধাভোগীদের হস্তান্তর করা হয় নি। এর আগেই ওই বিএনপি নেতা ছাড়াও বেশ কয়েকটি পরিবার ব্যারাক দখল করে পাঁচ পরিবারের পরিবর্তে একাই থাকছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা সাদেক মিয়ার স্ত্রী রোমানা বেগম বলেন, আমাদের থাকার জায়গা নাই। তাই আমরা দুইটা ঘর নিয়েছি, মানুষ আসলে একটা ছেড়ে দিব।
ইউপি সদস্য এরশাদুল হক বলেন, এখনো আশ্রয়ন ঘর গুলো হস্তান্তর করা হয়নি এর মধ্যে সব দখল করা শেষ। আর ওবাইদুল যে কাজটা করছে এটা মোটেও উচিৎ নয়। সে এই ভাবে ঘরের দেয়াল ভাঙতে পারে না। এসময় তিনি আশ্রয়ন ব্যারাক গুলো দ্রুত হস্তান্তরের জন্য কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
অভিযুক্ত বিএনপি নেতা ওবাইদুল ইসলাম বলেন, তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রীর জন্য এই ব্যারাক নিয়েছেন। এছাড়াও তিনি কক্ষের দেয়াল ভেঙে ফেলার কথা স্বীকার করে জানান, পাঁচ-সাত দিন হয়েছে দেয়াল ভাঙা হয়েছে। তবে দেয়াল ভাঙার বিষয়টি ভুল করেছেন বলে জানান সাবেক এই বিএনপি নেতা।
চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম জানান, সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্পটি হস্তান্তর করা হয়নি। এছাড়াও কেউ ঘর দখল করে চারদিক ঘেরার সুযোগ নেই। কেউ যদি দেয়াল ভেঙে ফেলে সেটি তিনি একক ভাবে করেছেন। আমরা কাউকে অনুমতি দেইনি।
ওবায়দুল ইসলাম বিএনপি করে বিষয়টি নিশ্চিত করে চিলমারী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব আবু হানিফা জানান, কেউ অন্যায় করে থাকলে তার শাস্তি হবে।
চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুজ কুমার বসাক জানান, বিষয়টি জানা ছিল না, খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।