শিরোনাম
জয় বাংলা’ স্লোগান বাংলাদেশের, ভারতে চলবে না: শুভেন্দু অধিকারী বৈষম্যবিরোধীর সদস্য পরিচয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়লেন যুবক শাপলা বিলে নৌকা ডুবে দুই বন্ধুর মৃত্যু সেনাসদস্যের বিরুদ্ধে আ.লীগ কর্মীদের প্রশিক্ষণের অভিযোগ:প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি; আরেক ছাত্রনেতা জানে আলম অপু গ্রেপ্তার ইন্টারনেট একা একা বন্ধ হয়ে গেছে’ প্রদর্শনীতে হাসির খোরাক পলাশবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মাণে অনিয়মের তদন্ত অনুষ্ঠিত ৩ আগষ্টের সমাবেশের জন্য ট্রেন ভাড়া করল ছাত্রদল বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে এইচএসসিতে প্রক্সি পরীক্ষা দেয়ার অভিযোগ ‎বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে নিষিদ্ধ আ.লীগ সভাপতির নাম
শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫, ০৫:৩৯ অপরাহ্ন

’আর যেন গন্ডগোল না হয়, হামরা শান্তিতে বসবাস করিবার চাই’

স্থানীয় রিপোর্ট / ২৬ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫

দুপুরের কড়া রোদ পড়ছে সদ্য লাগানো টিনের নতুন বেড়ায়। ঝিলমিল করে উঠছে আলো, যেন ভাঙাচোরা দিনগুলোকে ঢেকে রাখছে এক টুকরো আশ্বাসে। রংপুরের গঙ্গাচড়ার আলদাদপুর ছয়আনি বালাপাড়ায় সেই টিনের ঘরের পাশে দাঁড়িয়ে ষাটোর্ধ্ব কমলা কান্ত বাঁশে বাতা বাঁধছিলেন নিঃশব্দে। ঘর ভাঙার হাহাকার আর এখন ঘর সাজানোর ঠকঠক শব্দ—এই দুইয়ের মাঝে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি, ভাঙা বুক নিয়ে।

কমলা কান্ত বলেন, ‘ঘরবাড়ি সব ভাঙ্গি দিছিল। ঘাসের ব্যবসার ১৫ হাজার টাকা লুট করে নিছে। যা হওয়ার হইছে, আর যেন গন্ডগোল না হয়। হামরা শান্তিতে বসবাস করিবার চাই।’ কমলা কান্ত খিলালগঞ্জ বাজারে ঘাস বিক্রি করে সংসার চালান। তিনি জানান, বুধবার থেকে তিনি হাটে ঘাস নিলে মুসলিম ক্রেতারা কথা বলছেন না। পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করায় শুক্রবার আবার জমায়েত হবে বলে জেনেছেন তিনি।

কমলা কান্তের পাশের ঘরে বাঁশের খুঁটি লাগাচ্ছিলেন রাজমিস্ত্রির সহকারী রতন চন্দ্র। তিনি বলেন, ‘হামলা, মামলা, গ্রেপ্তারের ঘটনার পর বাইরে কাজে যেতে পারছি না। রাজমিস্ত্রির কাজ করি, বেশির ভাগ বাড়ির মালিক মুসলমান। ভয়ে কাজে যেতে পারছি না। দূরে কাজে গেলে যদি হামলা হয়। আমরা চাই আমাদের নিরাপত্তা। যাতে আর কোনো গন্ডগোল কারও সঙ্গে না হয়।’

গত শনি ও রোববার ধর্মীয় উত্তেজনার জেরে হামলার শিকার হয়েছিল এই পল্লির সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারগুলো। ভাঙচুর, লুটপাটে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল জীবন। অনেকেই মাথা গোঁজার ঠাঁই ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন আত্মীয়স্বজনের বাড়ি। সরকারি সহায়তায় ভাঙাচোরা বাড়িগুলো মেরামত করে দিয়েছে প্রশাসন। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে ভুক্তভোগী রবীন্দ্রনাথ বাদী হয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে গঙ্গাচড়া মডেল থানায় মামলা করেন। ওই দিন রাতেই অভিযান চালিয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পাঁচজনকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে।

পরদিন বুধবার ৪টার দিকে গঙ্গাচড়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে আসামিদের তোলা হলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালতের বিচারক কৃষ্ণ কমল রায় আজ বৃহস্পতিবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এদিকে ঘটনার পর বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আলদাদপুর ছয়আনি বালাপাড়া হিন্দুপল্লি পরিদর্শন করেন। তাঁরা বিভিন্নভাবে সহায়তার হাত বাড়ান। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, ‘পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ, সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভাঙাচোরা ঘরগুলো মেরামত করে দিয়েছি।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ