শিরোনাম
Studere en hvis den nye Terminator 2 spillemaskine রোববার দেখা মিলবে রক্তিম চাঁদের, বাংলাদেশ সময় যখন শুরু হবে আর যদি মাজার ভাঙে খবর আছে, হুঁশিয়ারি ফজলুর রহমানের আগে ঠিক করুন, শেখ হাসিনাকে আপা ডাকবেন নাকি আম্মাজান’, নুরের উদ্দেশ্যে জাপা মহাসচিব মাদ্রাসার সামনে অশোভন অঙ্গভঙ্গি, হাটহাজারীতে কওমী-সুন্নি উত্তেজনা; ১৪৪ ধারা জারি নুরের উপর হামলার প্রতিবাদে কিশোরগঞ্জে বিক্ষোভ শয়তান যেমন কখনো ভালো হয়না, আ.লীগ ও কখনো ভালো হতে পারে না তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের আয়োজক সুইটি গ্রেপ্তার কালীগঞ্জে সাংবাদিকদের সাথে জামায়াত প্রার্থী ফিরোজ হায়দারের মতবিনিময় অনির্দিষ্টকালের গণছুটি ঘোষণা পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীদের, বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের শঙ্কা
রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:৪৮ পূর্বাহ্ন

আমার স্বামীর গুলি লাগছে, দুইটা ছাওয়াক ধরি কীভাবে খাব?’

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর / ১৩৫ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

জেসমিন আক্তারের কোলে দেড় মাসের শিশু; দুই বছরের আরেক শিশু শ্বশুরের কাছে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ স্বামী শাহীন আলমের শয্যার পাশে বসে আছেন জেসমিন। স্বামীর যন্ত্রণাভরা নিশ্বাসে কাঁপছে তাঁর বুক। দুই শিশুসন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা জেসমিনের চোখেমুখে। এমন চিত্র দেখা গেল রমেক হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে।

জেসমিন আক্তার বলেন, ‘সকালে বাড়ি থাকি ইপিজেডের কোম্পানিতে ডিউটিত গেইছে। যাওয়ার পথে গুলি লাগছে। গুলি লাগি পড়ি গেইছে। নীলফামারী মেডিকেল নিগাইছে। ওটে থাকি রংপুর পাঠাইছে। এটে চিকিৎসা চলোছে। আমার স্বামীর গুলি লাগছে, দুইটা ছাওয়াক ধরি কীভাবে খাব? চাকরি করে, ওই টাকা দিয়া ছাওয়া ছোটক ধরি চলি। এখন আমরা কীভাবে খাব ছাওয়া দুইটাক ধরি?’

শাহীন আলম নীলফামারীর চংড়া কিসামতডাঙ্গী তেলিপাড়া গ্রামের দিনমজুর রজব আলীর ছেলে। তিনি নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে দেশবন্ধু পোশাক কারখানার শ্রমিক। প্রতিদিনের মতো গতকাল মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) কাজে গেলে এভারগ্রিন কোম্পানির শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন।

আজ বিকেলে রমেক হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শয্যায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন শাহীন। পাশে স্ত্রী, বাবা ও স্বজনেরা। একই ঘটনায় আহত হয়ে ভর্তি আছেন ম্যাজেন বিডি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শ্রমিক শামীম হোসেনও। তাঁর ভাই ইমরান জানান, গুলি তাঁর ভাইয়ের বাম পায়ের মাংসপেশি ভেদ করে বেরিয়ে গেছে। শামীম হোসেনের বাড়ি নীলফামারীর সোনারায়। তিনিও কাজের উদ্দেশে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন বলে জানান।

একপর্যায়ে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে শাহীন আলম বলেন, ‘অফিস টাইম, গেটে গেছি, যাইতে দিবে না। সেনাবাহিনীর সঙ্গে এক সময় কথা-কাটাকাটি, ঢিল ছোড়াছুড়ি শুরু হয়া গেইছে। ইটপাটকেল মারতে মারতে সেনাবাহিনী গুলি ছুড়ছে। গুলি ছোড়ার পর পাশে বন্ধু ছিল; ওরে গুলি লাগছে। পাশে আরেকজন ছিল তাঁর বুকে গুলি লাগছে, মারা গেইছে। আমার ঊরুতে গুলি লাগছে। অপারেশন হইছে; এখনো গুলি বের করার পারে নাই। যতবার অপারেশন করোছে, ততবার আলট্রাসনোগ্রাম, এক্সরে ডাবল করা লাগছে। এখনো গুলি আটকা, ব্যথায় শরীর খারাপ।’

শাহীনের বাবা রজব আলী বলেন, ‘আমার জমিজমা নাই। দুই ছেলে, শাহীন ইপিজেট করে বউ-ছাওয়া নিয়া আলাদা খায়। ওটে যে টাকা পায় তাকে দিয়া কোনো রকম পরিবার চলে। ওয় এখন গুলি খায়া হাসপাতালোত, ওর সংসার কায় চালাইবে? ছোট ছাওয়া দুইটাক কায় দেখবে?’

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ ও আহত রোগীর বিষয়ে জানতে চাইলে পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমান মোবাইল ফোনে বলেন, ‘এ বিষয়ে সঠিক জানা নেই। আপনি ওয়ার্ড মাস্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।’

এ নিয়ে কথা বলতে চাইলে রমেক হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার মাহাবুব হোসেন মানিক বলেন, ‘তিনজন শ্রমিক ভর্তি হয়েছিলেন। এর মধ্যে নুরনবী নামের একজন রাতেই চলে গেছেন। বাকি দুজন—শাহীন আলম ও শামীম হোসেনের অস্ত্রোপচার হয়েছে। তাঁরা এখন ৬ নম্বর ওয়ার্ডে আছেন। একই ঘটনায় আহত পুলিশের এসআই ফয়জুল ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি।’

উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডের এভারগ্রিন কোম্পানির কারখানা বন্ধ ও ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে শ্রমিকেরা ২৩ দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় গুলিতে নিহত হন ইকু ইন্টারন্যাশনাল নিটিংয়ের শ্রমিক হাবিব ইসলাম (২০)। আহত হন অন্তত ১০ জন শ্রমিক, গুরুতর তিনজনকে রমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ