অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, ছাব্বিশের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রস্তুত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামীকাল (২৪ আগস্ট) এই রোডম্যাপ ঘোষণা করতে পারে কমিশন। এরইমধ্যে দেশে নির্বাচনি হাওয়া বইতে শুরু করেছে।
এমন প্রেক্ষাপটে জাতীয় সংসদ নির্বাচন চান না বলে মন্তব্য করলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন।
তিনি বলেন, আমরা সংসদীয় নির্বাচনের কথা বলিও না, আমরা এটা চাইও না। আমরা মনে করি, গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সংবিধান করে তারপর রিস্টার্ট করবেন বাংলাদেশকে।
একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে একান্ত সাক্ষাতকারে সামান্তা শারমিন এসব কথা বলেন।
সামান্তা শারমিন বলেন, বাংলাদেশে একটি সেকেন্ড রিপাবলিক হবে তারপর আপনি দেশ চালাবেন। তাতে করে বিএনপিও যদি ম্যান্ডেট পায় তাহলে বিএনপি দেশ চালাবে। বিএনপির প্রস্তাব যদি জনগণের পছন্দ হয় গণপরিষদের মাধ্যমে জিতে এসে সংবিধান পরিবর্তন করবে।
‘সনদের বিষয়ে আমাদের কোনো আশা নেই’ উল্লেখ করে এই নেত্রী বলেন, কারণ সনদে এতো নোট অব ডিসেন্ট, অনেক বেশি কমপ্রোমাইজ এবং অনেক বেশি দলকে খুশি করার জন্য বিএনপি চাপ দিয়ে অনেক কিছু করিয়ে নিয়েছে। তাই সনদের আমি কোনো কার্যকরী কিছু দেখতে পাচ্ছি না।
তিনি বলেন, কারণ তিনি (আলী রীয়াজ) কোনো পদ্ধতিই বের করতে পারছেন না। তাই এটার একমাত্র পদ্ধতিই হলো গণপরিষদ নির্বাচন। কারণ গণপরিষদ নির্বাচন ছাড়া আর কোনো নির্বাচনের মাধ্যমে সংবিধানের এতো এতো ধারা- প্রায় ৭০ শতাংশ পরির্বতন হয়ে যায়। এতো এতো ধারা এটাকে নির্দিষ্ট করতে পারবেন না। এটা পরিবর্তন করার পর এটা একই রকম থাকবে; পরে কোর্ট এসে কলমের এক খোঁচায় বাদ দিয়ে দেবে- এই সিস্টেমটা যদি থেকে যায়; তাহলে এই সনদ, এতো সময় নষ্ট ও এই ঘোষণাপত্রেরও তো গুরুত্ব নাই; কারণ পরেরবার কোর্ট এটা বাদ দিয়ে দেবে।
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক বলেন, পলিটিক্যাল সিস্টেমে আমরা সব সময়েই দেখেছি সুপ্রিম কোর্ট এখানে হস্তক্ষেপ করেছে এবং এটাকে ব্যবহার করা হয়েছে। এটা কিন্তু আলাদা না। বিচার বিভাগ পুরোপুরি কিন্তু অধীন। মানে আমাদের আমলাতন্ত্র ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার অধীন।
বিএনপির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপির মনে হচ্ছে যে আমাদের সংসদীয় নির্বাচনের দিকে ঠেলে দিলে তাদের লাভ হয়। আমরা তো সংসদীয় নির্বাচনের দিকে যাব না। ওই যে ৩০টা আসন ৫০টা সে হিসাব তো পড়ে। আর গণপরিষদ নির্বাচন সে রকম তো না। সেটা পুরো দেশ থেকে নির্বাচিত হয়ে।
ড. ইউনূসের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘোষণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারিতে গণপরিষদ নির্বাচন হবে। আসন থেকেই তো সবাই নির্বাচন করবে। কিন্তু এটা গণপরিষদ নির্বাচনের উদ্দেশে- এটা বলতে হতো তো সবাইকে। আমরা যদি না বলি মানুষকে- তাহলে কী হবে এই নির্বাচনের পর, পরিবর্তন কী? আমরা তো একটা পার্টির কাছ থেকে আরেকটা পার্টির কাছে তুলে দিতে গণঅভ্যুত্থান ঘটাই নাই।