বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বেসিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে জাতির জন্য বেদনার হবে। নির্বাচনের আগে বেসিক সংস্কার ও দৃশ্যমান বিচার করতে হবে। পরবর্তীতে যারা ক্ষমতায় আসবেন, তারা এই কাজগুলো অব্যাহত রাখবেন। কোনো টালবাহানা করলে যুব সমাজ মেনে নেবে না। যুব সমাজ এখন পথ পেয়ে গেছে। যুব সমাজই আলোকিত সমাজ গড়ার হাতিয়ার।
তিনি বলেন, আমরা কাউকে মাস্টার মাইন্ড বলি না। কাউকে মাস্টারমাইন্ড বললে অন্যদের আন্ডার মাইন করা হয়। আমি সবসময় এই কৃতিত্ব শহীদ ও আহতদের দেই।লড়াই আমরা চালিয়ে যাবো মানুষের মুক্তির জন্য। জামায়াত একা দেশ বদলাতে পারবে না। দেশের সকল অংশীজনকে।
আজ (বৃহস্পতিবার) বিকেলে সিলেট জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জুলাই গণঅভ্যুত্থান শহীদ ও আহতদের স্মরণে সিলেট মহানগর জামায়াত আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আমীরে জামায়াত বলেন, যাদের জীবনের বিনিময়ে আমরা মুক্তি পেয়েছি, জাতি হিসেবে সারা জীবন মনে রাখবে। জুলাই বিপ্লবের পর আমরা প্রথম বলেছি, আইন কেউ হাতে তুলে নেবেন না। কেউ দোষী থাকলে আইনের হাতে সোর্পদ করতে। বিভিন্ন দেশে পরিবর্তন হয়েছে, পরিবর্তনের পর ব্যাপক ম্যাসাকার হয়, কিন্তু আমাদের দেশে তেমন কিছু হয়নি, আমরা দেশপ্রেমিক প্রমাণ করেছি। তিনি বলেন, কিছু হয়েছে যা, তা ধর্মীয় কারণে হয়নি, আমাদের বন্ধুদেশের হলুদ মিডিয়া প্রোপাগাণ্ডা চালিয়েছে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমাদের কোনো দাদা বাড়ি নেই, বেগম পাড়ায়ও কোনো বাড়ি নেই। আমরা দেশ ছেড়ে পালাইনি। তিনি বলেন, জামায়াত নির্যাতিত দল। আমরা শুধু মজলুম নই, আলিম ওলামাসহ অনেক দলই মজলুম। কী ভয়ানক নিপীড়ন চালিয়েছে ফ্যাসিট সরকার।জামায়াত আমীর বলেন, মানবতা মরে যায়নি, এখনও বেঁচে আছে, যারা শহীদ হয়েছে, ৭০ ভাগই খেটে-খাওয়া মানুষ। দল হিসেবে আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমরা আপনাদের পাশে আছি। আমরা শহীদ পরিবারকে বলেছি, আপনারা সুখের সময় স্মরণ না করলেও চলবে, যেকোনো প্রয়োজনে আমাদেরকে বলবেন, জামায়াত আপনাদের পাশে থাকবে। তিনি বলেন, শহীদ পরিবারের স্বপ্ন পূরণে কাজ করছে।
আমরা শহীদদের তালিকা নির্ভুল ভাবে তৈরি করছি। দুইটি ভলিউম ইতোমধ্যে বের হয়েছে। আহতদেরও ডাটাবেইজ তৈরি করা হবে। এ কাজ কোনো দলের নয়, এই কাজ সরকারের। শহীদদের রক্তের উপর দাড়িয়ে আছে এই সরকার। কিন্তু সরকার কেন করছে না। সরকারের ভালো কাজে সহযোগিতা থাকবে, কিন্তু সরকারের দুর্বল জায়গার কথা আমরা বলে যাবো। একটা খুনিদের বিচার নিশ্চিত করা, আরেকটি শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়ানো। তিনি বলেন
, রাজনৈতিক ঝুঁকি আসলে আমরা দেশ ছেড়ে যেতে চাই না। আমরা কোনো দেশে পালিয়ে যাইনি, যাবোও না। এই মাটিতেই আমরা থাকবো। আমরা আল্লাহকে ভয় করি। তিনি বলেন, পরিচিত অনেকে বিদেশে যেতে অফার করেছে, কিন্তু আমি সেই অফার অগ্রাহ্য করেছি।
শহীদ ও আহতদের যথাযথ সম্মান প্রদান করা। তারা জীবনের চাহিদা ছাড়া জাতিকে মুক্তি দিয়েছে, তাহলে রাষ্ট্রের ট্রেজারীর উদ্যাগে নেই কেন। আমরা ক্ষমতায় গেলে যথাযথ সম্মান ও আর্থিক সহযোগিতা করা হবে।ডা. শফিকুর রহমান বলেন, শুধু আওয়ামী লীগকে আগামীতে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীর দায়িত্ব, নিজ ও বাবার সম্পত্তি থেকে জনগণের কল্যাণে ব্যয় করবেন। জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হলে সম্পদ বিবরণী জমা দিতে হবে। সেটা জাতির সামনে প্রকাশ করা হবে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতের নেতাকর্মীরা তিলে তিলে গড়া ওঠা, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে তাদের কাছে দেশ শতভাগ নিরাপদ। তিনি বলেন, যে দলের কর্মীদের সামাল দিতে পারে না, তাদের কাছে দেশের একটি মানুষও নিরাপদ নয়।