ঘটনাটি ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারির। সেদিন ইরাকের বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে ড্রোন হামলা চালিয়ে ইরানের প্রভাবশালী সামরিক নেতা, কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানের নির্দেশ দেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই ঘটনার পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়ার পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরেও সমালোচনার ঝড় ওঠে। তখন হলিউডের বহু তারকাই প্রকাশ্যে ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন এবং ইরানের জনগণের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন।
মার্কিন অভিনেত্রী, সমাজকর্মী ও লেখিকা রোজ ম্যাকগাওয়ান সেই সময় একটি টুইটে লেখেন, ‘প্রিয় ইরান, যুক্তরাষ্ট্র আপনাদের দেশ, পতাকা ও জনগণের প্রতি অসম্মান দেখিয়েছে। আমাদের ৫২ শতাংশ জনগণ এ বিষয়ে বিনীতভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে। আমরা আপনাদের সঙ্গে শান্তি চাই। আমরা একটি সন্ত্রাসী সরকারের কাছে জিম্মি। মুক্তির উপায় আমাদের জানা নেই। অনুগ্রহ করে আমাদের হত্যা করবেন না।’
তিনি টুইটের শেষে ‘সোলাইমানি’ হ্যাশট্যাগও যুক্ত করেন। সে সময় এই বক্তব্য ঘিরে রোজ ম্যাকগাওয়ানকে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। পরে আরেকটি টুইটে তিনি জানান, আসন্ন যুদ্ধের ভয়েই তিনি এমন মন্তব্য করেছেন। একই সময়ে, মার্কিন কৌতুক অভিনেত্রী ক্যাথলিন ম্যারি গ্রিফিনও এক টুইটে লেখেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প অত্যন্ত মূর্খ ও চিন্তাহীনভাবে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে বিশ্বের যে কোনো স্থানে থাকা প্রত্যেক আমেরিকানকে মারাত্মক ঝুঁকির মুখে ফেলেছেন।’
তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন মার্কিন প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা ও লেখক মাইকেল মুর। তিনি কড়া ভাষায় ট্রাম্পের সমালোচনা করে লেখেন, ‘আমাদের (আমেরিকানদের) অজান্তেই ইরানের সঙ্গে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত যুদ্ধে জড়ানো হয়েছে।’
পাঁচ বছর পর এই টুইটগুলো আবারও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনায় এসেছে। কারণ রোববার (২২ জুন) ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এবারও যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে আছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরান বলছে, এটি তাদের সার্বভৌমত্বে সরাসরি হস্তক্ষেপ। আর বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে নতুন করে এক বিপজ্জনক যুদ্ধের শঙ্কায়। তাই হলিউড তারকাদের সেই সমালোচনাগুলো এখন যেন ভবিষ্যদ্বাণীমূলক হয়ে উঠেছে এবং ট্রাম্পের নীতির ধারাবাহিকতায় মধ্যপ্রাচ্যে আবারও অস্থিরতার দানা বাঁধছে।